আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
প্যারাসিটামল সহ ৫২ ওষুধ ‘ফেল’

প্যারাসিটামল সহ ৫২ ওষুধ ‘ফেল’

প্যারাসিটামল সহ ৫২ ওষুধ 'ফেল'
প্যারাসিটামল সহ ৫২ ওষুধ 'ফেল'

প্যারাসিটামল সহ ৫২ ওষুধ ‘ফেল’ পরীক্ষায়, সতর্কতা জারি CDSCO-র

প্যারাসিটামল সহ ৫২ ওষুধ ‘ফেল’ পরীক্ষায় , সতর্কতা জারি CDSCO-র , ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ডস কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশন’ (CDSCO) সম্প্রতি একটি সতর্কবার্তা জারি করেছে যা সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশ কিছু জনপ্রিয় ওষুধ, যেগুলো সাধারণত আমরা নিয়মিত ব্যবহার করি, সেগুলির নির্দিষ্ট ব্যাচ গুণমান পরীক্ষায় ফেল করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম হলো ‘প্যান ডি’ (Pan D) এবং ‘প্যারাসিটামল ৫০০’ (Paracetamol 500), যা প্রায় প্রতিটি ঘরেই ব্যবহৃত হয়। সাধারণ মাথা ব্যথা, জ্বর বা গ্যাসট্রিকের সমস্যায় এই ওষুধগুলি প্রায়ই নেওয়া হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক পরীক্ষায় এই ওষুধগুলির গুণমান আশানুরূপ নয় বলে রিপোর্ট করা হয়েছে।

কোন কোন ওষুধ ফেল করেছে এবং কেন?
সিডিএসসিও তাদের সাম্প্রতিক পরীক্ষায় ৫০টিরও বেশি নির্দিষ্ট ব্যাচের ওষুধকে ‘নট অফ স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি’ বা ‘এনএসকিউ’ (NSQ) হিসেবে ঘোষণা করেছে। সহজভাবে বলতে গেলে, এই ব্যাচগুলির ওষুধগুলি গুণগত মানের মাপকাঠি পূরণ করতে পারেনি। এতে উল্লেখযোগ্য ওষুধগুলির মধ্যে আছে ‘প্যান ডি’ এবং ‘প্যারাসিটামল ৫০০’।

কী ধরনের পরীক্ষায় ফেল করেছে ওষুধগুলি?
ওষুধের গুণমান নির্ধারণের জন্য সাধারণত বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করা হয়, যেমন:

সক্রিয় উপাদানের মাত্রা পরীক্ষা: ওষুধে যে সক্রিয় উপাদান থাকা উচিত, তা সঠিক পরিমাণে আছে কিনা তা দেখা হয়। যদি এর মাত্রা কম বা বেশি হয়, তবে সেটি গুণমান পরীক্ষায় ফেল করতে পারে।

দ্রাব্যতা ও শোষণ ক্ষমতা: শরীরে ওষুধটি কীভাবে দ্রবীভূত হয় এবং শোষিত হয় সেটিও একটি বড় ফ্যাক্টর। যদি এই প্রক্রিয়াগুলো সঠিক না হয়, তাহলে ওষুধ তার প্রয়োজনীয় কার্যকারিতা হারাতে পারে।

অধিক সময় সংরক্ষণ ক্ষমতা: ওষুধটি তার নির্ধারিত সময় পর্যন্ত কার্যকরী থাকবে কিনা, সেটি পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। কিছু ওষুধ দ্রুত তার কার্যকারিতা হারায় যা ব্যাচ অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।

‘প্যান ডি’ এবং ‘প্যারাসিটামল ৫০০’ কেন এতো জনপ্রিয়?
‘প্যান ডি’ হলো এমন একটি ওষুধ যা সাধারণত গ্যাসট্রিকের সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হয়। অনেকেই সকালে খালি পেটে এই ওষুধটি খেয়ে থাকেন যাতে পেটে গ্যাস তৈরি না হয় এবং অ্যাসিডিটি না বাড়ে। অন্যদিকে, ‘প্যারাসিটামল ৫০০’ একটি জনপ্রিয় ব্যথানাশক ওষুধ যা মাথাব্যথা, জ্বর, শরীর ব্যথা ইত্যাদির জন্য ব্যবহার করা হয়।

এই ওষুধগুলি আমাদের প্রতিদিনের জীবনের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই ওষুধগুলির ব্যাচ ফেল করায় এখন অনেকেই আতঙ্কিত। যদিও প্রতিটি ব্যাচ সমস্যাযুক্ত নয়, কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু ব্যাচের গুণগত মান কম পাওয়া গেছে।

 

আরো জানুন- অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে সতর্কতা: সঠিক ব্যবহার এবং ভুল ধারণা

 

কীভাবে পরীক্ষা করা হয় ওষুধের গুণমান?
ওষুধের গুণমান পরীক্ষা করার জন্য সিডিএসসিও বিভিন্ন ধরনের প্রটোকল অনুসরণ করে। কিছু ওষুধকে সরাসরি পরীক্ষাগারে নিয়ে গিয়ে সেখানেই পরীক্ষা করা হয়। প্রতিটি ওষুধের বিভিন্ন ব্যাচ নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং তারপর পরীক্ষাগারে বিভিন্ন মান নির্ধারণ প্রক্রিয়া করা হয়। ওষুধের কার্যকারিতা, দ্রাব্যতা, শোষণ ক্ষমতা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে যদি কোনো ব্যাচ গুণগত মানে ফেল করে, সেটিকে ‘নট অফ স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি’ বা এনএসকিউ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

কীভাবে গ্রাহকরা সচেতন হতে পারেন?
গ্রাহকরা এই ধরনের পরিস্থিতিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন:

ওষুধের ব্যাচ নম্বর পরীক্ষা করুন: আপনি যে ওষুধটি ব্যবহার করছেন, সেটির ব্যাচ নম্বর পরীক্ষা করতে পারেন। যদি সেটি সিডিএসসিওর তালিকাভুক্ত সমস্যাযুক্ত ব্যাচের মধ্যে থাকে, তবে সেই ওষুধ ব্যবহার করা বন্ধ করে দিন।

ডাক্তারের পরামর্শ নিন: যদি আপনার ব্যবহৃত ওষুধটি সমস্যা সৃষ্টি করে, তবে দ্রুত আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তারা আপনাকে বিকল্প ওষুধের পরামর্শ দিতে পারবেন।

কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করুন: যদি কোনো সন্দেহ থাকে, তবে সরাসরি কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন আপনার ব্যবহৃত ওষুধের গুণমান সম্পর্কে।

সিডিএসসিও কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?
সিডিএসসিও এই সমস্যার সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেসব ব্যাচগুলির গুণগত মান কম পাওয়া গেছে, সেগুলো বাজার থেকে তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, এই ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলোকে ভবিষ্যতে ওষুধ উৎপাদনের সময় আরো সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এতে করে গ্রাহকদের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

সাধারণ মানুষের কী করা উচিত?
যে সকল ওষুধ সমস্যাযুক্ত ব্যাচের মধ্যে পড়ছে, সেগুলি ব্যবহারের আগে ব্যাচ নম্বর ভালোভাবে যাচাই করা উচিত। যদি আপনি সন্দেহ করেন যে আপনার ব্যবহৃত ওষুধটি সমস্যাযুক্ত ব্যাচের মধ্যে পড়ছে, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে সেই ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যেহেতু গুণগত মান পরীক্ষা একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই সিডিএসসিওর থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

এই সমস্যার প্রভাব কী হতে পারে?
যে ওষুধগুলি গুণমান পরীক্ষায় ফেল করেছে, সেগুলি যদি ব্যবহৃত হয়, তাহলে রোগীর রোগ সারানোর প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। গুণমানহীন ওষুধের ফলে সঠিকভাবে রোগ নিরাময় নাও হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে যারা দীর্ঘমেয়াদী রোগে ভুগছেন, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, বা অন্য কোনো ক্রনিক রোগ, তাদের জন্য এই ধরনের ওষুধ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই ওষুধ ব্যবহারের আগে তার গুণমান সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।

সিডিএসসিওর এই রিপোর্ট সাধারণ মানুষের জন্য একটি সতর্ক সংকেত হিসেবে কাজ করছে। আমরা প্রতিদিন যে ওষুধগুলো ব্যবহার করি, সেগুলোর গুণগত মান সঠিক না হলে তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে। তাই গ্রাহকদের উচিত তাদের ব্যবহৃত ওষুধের ব্যাচ নম্বর যাচাই করা এবং সন্দেহ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web