আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কী ?

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কী ?

ইলেকটোরাল কলেজ
ইলেকটোরাল কলেজ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়িয়েছে। ভোটাররা আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প

নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন একটি জটিল পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়, যেখানে ভোটের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করে ইলেকটোরাল কলেজের ওপর। এখানে আমরা এ বছরের নির্বাচনের মূল দিকগুলো, ইলেকটোরাল কলেজের পদ্ধতি ও এই নির্বাচনের প্রভাব নিয়ে বিশদ আলোচনা করবো।

ইলেকটোরাল কলেজ: নির্বাচনের মূল ভিত্তি

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে “ইলেকটোরাল কলেজ” পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ৫৩৮ জন ইলেকটর, যাদের সাধারণত ইলেকটোরাল কলেজের সদস্য বলা হয়, তারা চূড়ান্তভাবে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন। গণভোটে অধিকাংশ ভোট পাওয়া প্রার্থী নয় বরং, ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া প্রার্থীই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এই কারণে ইলেকটোরাল কলেজকে কেন্দ্র করে মার্কিন নির্বাচন পদ্ধতি বিশ্বজুড়ে আলোচিত।

ইলেকটোরাল কলেজ

ইলেকটোরাল কলেজ

ইলেকটোরাল কলেজ গঠন ও ভোটের সংখ্যা নির্ধারণ

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মোট ৪৩৫ জন প্রতিনিধি ও ১০০ জন সিনেটর রয়েছেন, যারা ইলেকটোরাল ভোট প্রদান করেন। এছাড়া ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার তিনজন ইলেকটোর যুক্ত হওয়ায় মোট ইলেকটোরাল ভোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৩৮টি। প্রত্যেক অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট সংখ্যা নির্ধারিত হয় তার জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে। উদাহরণস্বরূপ, ক্যালিফোর্নিয়ার জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় তার ৫৪টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে, যা যে কোনো প্রার্থীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে, ছোট রাজ্য ভারমন্টের ইলেকটোরাল ভোট সংখ্যা মাত্র তিনটি।

নির্বাচনে জয়লাভের জন্য প্রয়োজনীয় ইলেকটোরাল সংখ্যা

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে হলে কোনো প্রার্থীর কমপক্ষে ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট প্রয়োজন। এর জন্য প্রার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোর মধ্যে জয় নিশ্চিত করতে হয়। অধিকাংশ রাজ্যই “উইনার-টেকস-অল” পদ্ধতি অনুসরণ করে, যার মানে যে প্রার্থী একটি রাজ্যে অধিক ভোট পান, তিনি সেই রাজ্যের সব ইলেকটোরাল ভোট পান। তবে মেইন এবং নেব্রাস্কা এই নিয়মের বাইরে, যেখানে ইলেকটোরাল ভোট বিভাগে কিছুটা ভিন্ন নিয়ম অনুসরণ করা হয়।

ইলেকটোরাল কলেজে সদস্য মনোনয়ন

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে, প্রতি দলের পক্ষ থেকে মনোনীত ইলেকটোরাল ভোটারদের তালিকা জমা দেওয়া হয়, যাকে “স্লেট” বলা হয়। যখন ভোটাররা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন, তারা মূলত তাদের দলের স্লেটটিকে নির্বাচন করেন। এ ধরনের স্লেটের প্রার্থী মূলত দলের প্রতি অনুগত থাকেন, যার ফলে গণভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রার্থীই শেষ পর্যন্ত ইলেকটোরাল ভোটে জয়ী হন।

আরো পড়ুন- লেবাননের আকাশসীমা থেকে ইসরায়েলে যুদ্ধবিমান ঢুকে পড়েছে

ইলেকটোরাল ভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত নির্বাচন

নির্বাচনের পর ডিসেম্বরে ইলেকটোরাল ভোটাররা বৈঠকে বসেন এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোট দেন। তারপর জানুয়ারির ৬ তারিখে এই ভোটগুলো গণনা করার জন্য কংগ্রেসের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট সভাপতিত্ব করেন। এই গণনার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়।

প্রার্থীদের প্রচারণা ও কৌশল

এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয়ই ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণায় গুরুত্ব পাচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্যসেবা ও সমতা, যা তরুণ প্রজন্মের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প জোর দিচ্ছেন জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও অভিবাসন নীতির ওপর। উভয় প্রার্থীই মূল রাজ্যগুলোর ইলেকটোরাল ভোট পেতে সচেষ্ট রয়েছেন এবং বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা সভা ও বক্তব্য রাখছেন।

কেন ইলেকটোরাল কলেজ গুরুত্বপূর্ণ

ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সিস্টেমের মূল অংশ, যা ছোট রাজ্যগুলোকে ভোটে প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ দেয়। এতে করে ছোট ও বড় রাজ্যগুলোর মধ্যে সমতা বজায় থাকে এবং একক রাজ্যের জনসংখ্যা পুরো নির্বাচনের ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে না। তবে এ পদ্ধতির সমালোচনারও অভাব নেই, বিশেষ করে যারা মনে করেন সরাসরি গণভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা উচিত।

বিতর্ক ও সমালোচনা

ইলেকটোরাল কলেজের বিরুদ্ধে সমালোচনা রয়েছে যে এটি সংখ্যালঘু রাজ্যগুলোর অগ্রাধিকার দেয়। অনেকেই মনে করেন যে সরাসরি জনগণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়া উচিত। যেহেতু অধিকাংশ ইলেকটোরাল ভোট নির্ধারিত হয় মাত্র কয়েকটি রাজ্যের মাধ্যমে, তাই বাকিরা বঞ্চিত থাকে বলে সমালোচকরা মনে করেন।

সাম্প্রতিক নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়িয়েছে এবং এই দুই প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে প্রচুর বিতর্ক চলছে। ইলেকটোরাল কলেজের পদ্ধতি নিয়েও বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

নির্বাচন পরবর্তী চ্যালেঞ্জ

এই নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রে কিছু চ্যালেঞ্জ সামনে আসতে পারে। বিশেষ করে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, স্বাস্থ্য সেবা, জাতিগত সমতা, ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোর ওপর জনমত বিভক্ত রয়েছে। নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের কাজ হবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা এবং দেশের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা, অর্থনীতি ও বৈশ্বিক প্রভাব নিশ্চিত করা।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web