আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে কমলা হ্যারিস, শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ট্রাম্প

ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে কমলা হ্যারিস, শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ট্রাম্প

ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে কমলা হ্যারিস, শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ট্রাম্প
ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে কমলা হ্যারিস, শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ২০২৪: ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে কমলা হ্যারিস, শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ট্রাম্প

আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এই নির্বাচন নিয়ে বিশ্বজুড়ে আগ্রহের শেষ নেই। এবার মার্কিন জনগণ ঠিক করবে তারা কি প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছে, নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় ফিরছেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে জো বাইডেন রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন, কিন্তু এ বছর জুলাইয়ে তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিজের সমর্থন দিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে। ফলে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে এবার নির্বাচনে লড়ছেন হ্যারিস।

নির্বাচন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের প্রতিযোগিতা

নির্বাচনের শুরু থেকেই রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এর আগে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হয়েছিলেন এবং এখন পুনরায় প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প

এদিকে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিস প্রতিযোগিতায় এসেই ট্রাম্পের চেয়ে সামান্য এগিয়ে যান। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যায়, হ্যারিসের পক্ষে সমর্থন ৪৮ শতাংশ, যেখানে ট্রাম্প মাত্র এক শতাংশ কম সমর্থন পেয়েছেন। তবে নির্বাচনে ব্যবধান একেবারেই ক্ষুদ্র, যা যে কোনো মুহূর্তে পরিবর্তিত হতে পারে।

কমলা হ্যারিসের প্রচারণা এবং ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বিতা

নির্বাচনি প্রচারণার প্রথম দিকে কিছুটা বাধার সম্মুখীন হন কমলা হ্যারিস। আগস্টের শেষ দিকে তিনি পুনরায় নিজেকে সামলে নিয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে যান। নির্বাচনের দুই প্রার্থীর মধ্যে অনুষ্ঠিত বিতর্কে প্রায় ৭০ মিলিয়ন দর্শক যুক্ত ছিলেন, যা তাদের

কমলা হ্যারিস

কমলা হ্যারিস

মধ্যে জনপ্রিয়তার স্থিতিশীলতা আনতে সহায়ক হয়েছিল। এদিকে, ট্রাম্পের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট রাজ্যগুলোতে প্রচারণা চালানো হয়েছে, বিশেষ করে সুইং স্টেটগুলোতে, যেখানে ভোটের ফলাফল সুনির্দিষ্ট না থাকায় যেকোনো দল জয় পেতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থা: ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতি

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি রাজ্যে জনসংখ্যার অনুপাতে ভোট প্রদান হয়। মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজের মধ্যে কোনো প্রার্থী যদি ২৭০টি বা তার বেশি ভোট পায়, তবেই তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন। ফলে নির্বাচনে এককভাবে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা না, বরং রাজ্য ভিত্তিক ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৫০টি রাজ্য রয়েছে, কিন্তু সব রাজ্য সমানভাবে গুরুত্ব পায় না। কিছু রাজ্য সবসময়ই একই দলের প্রতি অনুগত থাকে, যেমন— রিপাবলিকান দুর্গ হিসেবে পরিচিত ‘রেড স্টেট’ এবং ডেমোক্র্যাট প্রাধান্যযুক্ত ‘ব্লু স্টেট’। এদিকে, কিছু রাজ্যে প্রতিযোগিতা অত্যন্ত কঠিন হওয়ায়, সেই রাজ্যগুলোকে বলা হয় সুইং স্টেট। এই রাজ্যগুলোয় জয়ী হওয়ার মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

সুইং স্টেটগুলোর পরিস্থিতি

সুইং স্টেট হিসেবে পরিচিত সাতটি রাজ্যে নির্বাচনে এবারের মূল লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু। এসব রাজ্যের মধ্যে অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নেভাডা, নর্থ ক্যারোলাইনা, মিশিগান, পেনসিলভানিয়া এবং উইসকনসিন প্রধান। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হওয়ার পর থেকে কমলা হ্যারিস এসব রাজ্যে প্রচারণায় মনোযোগ দিয়েছেন। কিছু জরিপে দেখা যায়, কয়েকটি রাজ্যে ট্রাম্পের সামান্য লিড আছে, তবে পেনসিলভানিয়ায় হ্যারিসকে কিছুটা শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ের আগে মিশিগান, পেনসিলভানিয়া এবং উইসকনসিনে রিপাবলিকান প্রাধান্য তৈরি করেছিলেন। তবে, ২০২০ সালে বাইডেন সেই রাজ্যগুলোতে ফের জয়লাভ করেন।

আরো পড়ুনপ্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার বা ২ লাখ কোটি টাকা সরিয়েছেন শেখ হাসিনার সহযোগীরা!

নির্বাচনী প্রচারণায় পরিবর্তন এবং সুইং স্টেটের গুরুত্ব

পেনসিলভানিয়া এই নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের দিক থেকে অনেক বেশি প্রভাবশালী। সুইং স্টেটগুলোতে যারা জয় পায়, তাদের জাতীয় জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কমলা হ্যারিসের প্রচারণার মধ্যে পেনসিলভানিয়া ও অন্যান্য সুইং স্টেটগুলোতে জনসংযোগ বৃদ্ধির প্রতি জোর দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, ট্রাম্পের প্রচারণায় লক্ষ্য রাখা হয়েছে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে।

জরিপের গড় তৈরি এবং সঠিকতার প্রশ্ন

জাতীয় ও স্থানীয় জরিপের তথ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম গড় তৈরি করে। তবে জরিপে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা, সময় এবং পদ্ধতি ভিন্ন থাকায় সঠিকভাবে ফলাফলের পূর্বাভাস দেওয়া প্রায়ই কঠিন হয়ে পড়ে। জরিপের এই সীমাবদ্ধতার জন্য ২০১৬ এবং ২০২০ সালে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি। এবারও জরিপগুলো নির্বাচনের সঠিক চিত্র প্রতিফলিত করবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

ট্রাম্প ও হ্যারিসের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

সাম্প্রতিক জরিপে কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে খুব কাছাকাছি প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোটারদের মতামতের ভিত্তিতে গড় তৈরি করা হলেও জরিপের ভিত্তিতে চূড়ান্ত ফলাফল পূর্বাভাস দেওয়ার সঠিক মাধ্যম নয়। ফলে শেষ মুহূর্তে নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন হতে পারে এবং নির্বাচনের দিন ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণও চূড়ান্ত ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে।

কমলা হ্যারিস: প্রথম নারী প্রেসিডেন্টের স্বপ্ন

কমলা হ্যারিস যদি জয়লাভ করেন, তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হবেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে নারী নেতৃত্বের ক্ষেত্রে এটি হবে নতুন অধ্যায়। ২০২৪ সালের এই নির্বাচন নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক হতে পারে। এর পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে যাচ্ছে হ্যারিসের দল, ডেমোক্র্যাট।

নির্বাচনের ভবিষ্যৎ প্রভাব ও বিশ্লেষণ

এবারের নির্বাচন শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নয়, বিশ্ব রাজনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক, বাণিজ্যিক চুক্তি, সামরিক ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক জলবায়ু চুক্তি এবং মানবাধিকার বিষয়ক নীতি প্রণয়নে প্রভাব ফেলতে পারে। প্রেসিডেন্টের বদল হলে, মার্কিন নীতি প্রণয়নে বদল আসতে পারে, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে প্রভাবিত করতে পারে।

সূত্র: বিবিসি

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web