আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার জন্য হাইকোর্টে দায়ের করা একটি রিট আবেদন। সোমবার (২৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিটটি জমা দেওয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম, এই রিটের আবেদনকারী হিসেবে কাজ করেছেন।
এই রিট আবেদনের মূল উদ্দেশ্য হলো আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া। আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম বলেন, “আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি যে দলটি যাতে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে।” বিচারপতি ফাতেমা নজীব এবং বিচারপতি সিকদার মো. মাহমুদুর রাজীর দ্বৈত বেঞ্চে এই রিটের শুনানি হতে পারে।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলি দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং তারা তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও বৈষম্য সৃষ্টি করছে। এর আগে, ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আরও জানুন –বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ
হাসনাত আবদুল্লাহ এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আওয়ামী লীগের কোনো নৈতিক অধিকার নেই রাজনীতি করার। জার্মানিতে নাৎসি বাহিনীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ইতালিতেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের দেশেও একইভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।”
গত আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য একটি রিট করা হয়েছিল, যা বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামানের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চে খারিজ করে দেওয়া হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান রিটের আবেদন অনেকটাই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রিট আবেদনের বিষয়টি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, এটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। ছাত্র আন্দোলনকারীদের মতে, বর্তমান সরকার তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে এবং তারা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ নয়।
বিরোধী দল বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দ এই রিট আবেদনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তারা বলেন, সরকার যদি জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা না জানায়, তবে সেই দলের অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই আবেদনের ফলে দেশের রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হতে পারে।
আদালত রিট আবেদনটি গ্রহণ করলে এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন মাত্রা যোগ করবে। আদালতের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কার্যক্রম অনেকটাই নির্ভর করবে। এই আবেদনের মাধ্যমে দেশব্যাপী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি মাইলফলক তৈরি হতে পারে।
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বাঁক পরিবর্তন হতে পারে। জনমত ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশে একটি নতুন রাজনৈতিক পরিবেশের সৃষ্টি হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের উন্নয়নকে সহায়তা করবে।
এই আবেদনের প্রতিক্রিয়া এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিকাশ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য স্থানীয় সংবাদপত্র এবং নিউজ পোর্টালগুলোতে নজর রাখতে হবে।
Leave a Reply