আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন সালমান খান

বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন সালমান খান

বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন সলমন খান
বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন সলমন খান

বাবা সিদ্দিকির মৃত্যু ঘুম কেড়েছে সালমানের!

বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন সালমান খান, মুম্বাই পুলিশের সাম্প্রতিক দাবির পর, রবিবার মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা বাবা সিদ্দিকির হত্যার দায়িত্ব লরেন্স বিশ্নোইয়ের দলের সদস্যরা নিয়েছে। বিশ্নোইয়ের দলের লোক হিসেবে পরিচিত শুবু লঙ্কার তার সামাজিক মাধ্যমের একটি পোস্টে লিখেছেন, “আমাদের কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই। তবে সালমান খান বা দাউদ ইব্রাহিমকে যারা সাহায্য করবেন, তারা এখন থেকে দিন গুনতে শুরু করুন।”

মুম্বাইয়ে লরেন্স বিশ্নোইয়ের দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত সদস্যদের দ্বারা ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিশ্নোই গ্যাং ভারতের বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত বলে ইতিমধ্যে পরিচিত, কিন্তু এই হত্যার দায় স্বীকারের ফলে সারা দেশে আতঙ্কের সঞ্চার হয়েছে।

বাবাস সিদ্দিকির হত্যার পেছনের কারণ

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মাস দুয়েক আগেই প্রয়াত নেতা সিদ্দিকি খুনের হুমকি পেয়েছিলেন। তার এই আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। যদিও মুম্বাই পুলিশের তদন্ত এখনও চলমান, কিন্তু বিশ্নোই গ্যাংয়ের হাতে এই খুনের ঘটনা তাদের আগ্রাসী কার্যক্রমের একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

খবরে আরও বলা হয়েছে যে, বাবা সিদ্দিকি ও সলমন খানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। এমনকি গুঞ্জন রয়েছে যে, এই বন্ধুত্বের কারণে বাবা সিদ্দিকির জীবন সংশয়ে পড়তে হয়েছে। সলমন খান লরেন্স বিশ্নোইয়ের হুমকির লক্ষ্যবস্তু হওয়ার পর থেকেই, যারা সলমন বা তার পরিবারকে সহযোগিতা করেছে, তারাও একই ধরনের হুমকির মুখোমুখি হয়েছে।

সলমন খানের প্রতিক্রিয়া

এই মর্মান্তিক ঘটনার পর থেকে সলমন খান মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। খবর পাওয়া মাত্রই তিনি তার জনপ্রিয় টিভি শো ‘বিগ বস্ ১৮’-এর শুটিং বন্ধ করে দেন। সলমনের বন্ধুকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে খবরটি পাওয়ার পরই তাকে তৎক্ষণাৎ লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যেখানে সলমনও দ্রুত সেখানে পৌঁছান। যদিও তার নিরাপত্তার কারণে হাসপাতালে না যেতে তাকে নিষেধ করা হয়েছিল, তবে সলমন সেই নিষেধাজ্ঞা মানেননি।

প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুতে সলমন খান ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছেন। তাকে প্রতিদিন জিশান সিদ্দিকির সাথে ফোনে কথা বলতে দেখা গেছে, যাতে শেষকৃত্যের সমস্ত আয়োজন সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়। যদিও সলমন নিজে শেষকৃত্যে যোগ দিতে পারেননি, তবে তার দুই বোন অর্পিতা খান, অলভিরা খান এবং বান্ধবী ইউলিয়া ভন্তুর সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

লরেন্স বিশ্নোই ও সলমন খানের সম্পর্ক

লরেন্স বিশ্নোই গ্যাং এবং সলমন খানের মধ্যকার শত্রুতার ইতিহাস বেশ পুরনো। বিশ্নোই গ্যাংয়ের দাবী যে, তারা সলমনকে তাদের ‘টার্গেট’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বহু বছর আগে থেকেই। সলমন খান একাধিকবার হত্যার হুমকির মুখোমুখি হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল, ২০২2 সালে বিশ্নোই গ্যাংয়ের এক সদস্যের কাছ থেকে একটি চিঠি পাওয়া যায়, যাতে সলমনকে সরাসরি হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

এই শত্রুতার পেছনের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সলমন খানের বিরোধপূর্ণ কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের মামলা। বিশ্নোই সম্প্রদায় কৃষ্ণসার হরিণকে পবিত্র বলে মানে, এবং সলমন খানের বিরুদ্ধে এই মামলা ওঠার পর থেকেই তারা তাকে তাদের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে। লরেন্স বিশ্নোইও সলমন খানের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন এবং তার শাস্তির দাবি করে আসছিলেন।

আরো পড়ুন- প্রখ্যাত নাট্যজন, নির্দেশক, অভিনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন হোসেনের মৃত্যু

মুম্বাইয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা

এই হত্যার ঘটনা মুম্বাইয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে নতুনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিশ্নোই গ্যাংয়ের এই ধরনের তৎপরতা এবং হুমকি গোটা মুম্বাই জুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মুম্বাই পুলিশ সলমন খানের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে এবং তার আশপাশের এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

তাছাড়া, সলমন খান এবং তার পরিবারকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখা হয়েছে এবং তাদের যেকোনো যাতায়াতের জন্য সশস্ত্র নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে। মুম্বাইয়ের অপরাধ জগৎ এবং বলিউডের সম্পর্ক নিয়ে অনেক বিতর্ক এবং আলোচনা রয়েছে, এবং এই ঘটনা সেই সম্পর্কগুলোর ওপর নতুন আলোকপাত করছে।

বলিউডের প্রতিক্রিয়া

বলিউডের অন্যান্য সেলিব্রিটিরাও এই হত্যাকাণ্ড এবং সলমন খানের মানসিক অবস্থার প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। সবার মনে এখন একটাই প্রশ্ন: কি কারণে বাবাস সিদ্দিকিকে এইভাবে প্রাণ দিতে হলো এবং সলমন খান কি এই ঘটনায় নিজেকে দায়ী করছেন?

প্রিয় বন্ধুর মৃত্যু এবং নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে সলমনের মানসিক চাপ অত্যন্ত তীব্র হয়ে উঠেছে। বলিউডের মধ্যে বন্ধুত্বের এই বন্ধন এবং একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের সাথে অপরাধ জগতের সরাসরি যোগাযোগের ঘটনা খুবই দুঃখজনক ও হতবাক করে তুলেছে সবাইকে।

ভবিষ্যত প্রেক্ষাপট

মুম্বাই পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে থাকা মূল রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে, তবে লরেন্স বিশ্নোই গ্যাংয়ের সদস্যদের দ্বারা খুনের দায় স্বীকারের পর তদন্তের গতিপথ আরও জটিল হয়ে উঠেছে। মুম্বাইয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি এই ঘটনায় জড়িত সমস্ত ব্যক্তির ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ড মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের গভীর জটিলতা এবং বলিউডের সাথে অপরাধী গ্যাংদের সম্পর্কের প্রতি আবারও নজর দিয়েছে। সলমন খান যেমন বলিউডের সবচেয়ে বড় তারকাদের একজন, তেমনি তিনি বিশাল একটি শ্রোতাদের জন্য অনুপ্রেরণা এবং আইকন। তার সাথে এই ধরনের অপরাধী গ্যাংয়ের সংঘর্ষ বলিউড এবং দেশজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

 

মুম্বাইয়ের রাজনীতির সঙ্গে অপরাধ জগতের সম্পর্ক নতুন নয়, তবে এই হত্যাকাণ্ড একটি গুরুতর সতর্কতা। লরেন্স বিশ্নোই গ্যাংয়ের হুমকি এবং বাবাস সিদ্দিকির হত্যাকাণ্ড সবার মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সলমন খানকে নিশানা করা, তার বন্ধুদের হুমকির মুখে পড়া, এবং এই হত্যাকাণ্ডের সুত্রপাত একটি বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে – বলিউডের তারকাদের নিরাপত্তা কতটুকু সুরক্ষিত?

মুম্বাই পুলিশ ও অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থা এই ঘটনার পুরো চিত্র বের করার জন্য কঠোরভাবে কাজ করছে। তাছাড়া, এই ঘটনার পর থেকে সলমন খানের জীবনের প্রতি বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এই হত্যা এবং এর সাথে সম্পর্কিত সব কিছু মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের একটি মর্মান্তিক অধ্যায় হিসেবে ইতিহাসে লেখা থাকবে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web