আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট , টাক সমস্যার সমাধানে অন্যতম

হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট , টাক সমস্যার সমাধানে অন্যতম

হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট , টাক সমস্যার সমাধানে অন্যতম
হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট , টাক সমস্যার সমাধানে অন্যতম

হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট , টাক সমস্যার সমাধানে অন্যতম ।

চুল প্রতিস্থাপন বা হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বর্তমানে টাক সমস্যার সমাধানে অন্যতম জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ মাথার নির্দিষ্ট অংশে চুলের ঘনত্ব হারিয়ে ফেললে এই পদ্ধতি গ্রহণ করে থাকে। মূলত চুল প্রতিস্থাপন পদ্ধতিতে মাথার একটি অংশ থেকে চুল সংগ্রহ করে তা টাক হওয়া বা চুলের কমতি হওয়া অংশে স্থানান্তর করা হয়।

এই পদ্ধতিতে চুল সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চল রয়েছে যেগুলিকে বলা হয় ‘পারমানেন্ট জোন’। সাধারণত মাথার পেছন দিক এবং কানের দুই পাশের অংশকে পারমানেন্ট জোন বলা হয়, কারণ এই অঞ্চলের চুল খুব কমই পড়ে এবং বেশ স্থায়ী। তাই এই অংশ থেকে চুল সংগ্রহ করা হলে তা অনেক স্থায়ী হয়ে থাকে। অন্যদিকে, মাথার সামনের দিকটি ‘টেম্পোরারি জোন’ হিসেবে পরিচিত। এই অংশের চুল বিভিন্ন কারণে ঝরে যেতে পারে এবং এতে করে টাক সৃষ্টি হয়।

হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের সময় মাথার পারমানেন্ট জোন থেকে চুলের ফলিকল (চুলের শেকড়সহ অংশ) তুলে টেম্পোরারি জোনে স্থানান্তর করা হয়। এ প্রক্রিয়াটি খুবই সূক্ষ্ম এবং উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। সাধারণত ডার্মাটোলজিস্ট বা কসমেটিক সার্জনরা এই পদ্ধতি সম্পন্ন করে থাকেন। চুল প্রতিস্থাপনের ফলে নতুন করে চুল গজায় এবং এটি স্বাভাবিক চুলের মতোই বৃদ্ধি পেতে থাকে।

এই পদ্ধতিতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত দুটি প্রধান পদ্ধতি রয়েছে: ফলিকুলার ইউনিট ট্রান্সপ্লান্টেশন (FUT) এবং ফলিকুলার ইউনিট এক্সট্রাকশন (FUE)।

ফলিকুলার ইউনিট ট্রান্সপ্লান্টেশন (FUT)

এ পদ্ধতিতে পারমানেন্ট জোন থেকে চামড়ার একটি সরু অংশ কেটে নেওয়া হয়, যাতে সেই অংশে থাকা চুলের ফলিকলগুলি সংগ্রহ করা যায়। এরপর এই ফলিকলগুলি একে একে টেম্পোরারি জোনে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই পদ্ধতিতে মাথার পিছনে একটি ছোট কাটা দাগ থাকে যা পরবর্তীতে সেলাই করে দেওয়া হয় এবং চুলে ঢেকে যায়। এটি সাধারণত তখন করা হয় যখন বৃহৎ পরিমাণে চুল প্রতিস্থাপন করতে হয়।

ফলিকুলার ইউনিট এক্সট্রাকশন (FUE)

এই পদ্ধতিটি তুলনামূলকভাবে আধুনিক এবং এখানে কোনও কাটাছেঁড়া করা হয় না। পারমানেন্ট জোন থেকে একেকটি চুলের ফলিকল আলাদা করে সংগ্রহ করা হয় এবং তা মাথার টেম্পোরারি জোনে প্রতিস্থাপন করা হয়। যেহেতু কোনও বড় আকারের কাটা দাগের প্রয়োজন নেই, তাই এটি অধিকতর কম ইনভেসিভ পদ্ধতি। পুনরুদ্ধারের সময়ও কম লাগে, এবং এই পদ্ধতি অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেশি জনপ্রিয়।

কেন মানুষ হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করান?

হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রয়োজনীয়তা অনেক কারণেই হতে পারে। চুল পড়া বা টাক সমস্যার কারণে আত্মবিশ্বাসের অভাব হতে পারে এবং একজন মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে বংশগত কারণেও চুল পড়তে পারে যা সময়ের সাথে টাক সমস্যায় রূপান্তরিত হয়। এই ধরনের অবস্থায়, হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট একটি স্থায়ী সমাধান প্রদান করতে পারে।

প্রাকৃতিক কারণ ছাড়াও, ট্রমা, দুর্ঘটনা বা শারীরিক আঘাতের কারণে চুল হারিয়ে গেলে কিংবা সার্জারি-পরবর্তী চুলের ঘাটতি দেখা দিলে, চুল প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন কারণে চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যায় হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়ে থাকে।

হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রক্রিয়া

প্রথমেই, একজন বিশেষজ্ঞ ডার্মাটোলজিস্ট বা কসমেটিক সার্জন রোগীর মাথার চুলের পরিস্থিতি পরীক্ষা করেন এবং কোন পদ্ধতিটি সবচেয়ে উপযুক্ত হবে তা নির্ধারণ করেন। এরপর রোগীর শারীরিক অবস্থা বুঝে একটি সার্জারি প্ল্যান তৈরি করা হয়।

প্রথম ধাপ হিসেবে, রোগীকে লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া প্রদান করা হয় যাতে প্রতিস্থাপনের সময় ব্যথা অনুভূত না হয়। তারপর পারমানেন্ট জোন থেকে চুলের ফলিকল সংগ্রহ করে টেম্পোরারি জোনে স্থাপন করা হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি ৪-৮ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন হতে পারে, নির্ভর করে চুলের পরিমাণ এবং সার্জনের দক্ষতার উপর। সার্জারি শেষে, রোগীকে কিছু বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়, যেমন কিভাবে চুলের যত্ন নিতে হবে এবং কি কি করা উচিত নয়।

হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরবর্তী ফলাফল

সার্জারি শেষে, সাধারণত কিছু দিনের মধ্যে প্রতিস্থাপিত চুল পড়ে যেতে শুরু করে। তবে এটি স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া, যাকে ‘শক লস’ বলা হয়। নতুন চুল গজাতে শুরু করে কয়েক মাস পরে। এক বছরের মধ্যেই চুল সম্পূর্ণভাবে বৃদ্ধি পায় এবং তা প্রাকৃতিক চুলের মতোই দেখতে ও অনুভব করতে শুরু করে।

তবে চুল প্রতিস্থাপনের পর কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়, যেমন সরাসরি রোদে বেশি সময় থাকা উচিত নয় এবং কিছু সময়ের জন্য ভারী কাজ এড়িয়ে চলা উচিত। পাশাপাশি, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ওষুধ এবং চুলের যত্নের প্রোডাক্ট ব্যবহার করা হতে পারে, যা চুলের সুস্থতা নিশ্চিত করে।

হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের খরচ

চুল প্রতিস্থাপনের খরচ অনেকটা নির্ভর করে সার্জন, ক্লিনিক, এবং প্রতিস্থাপনের পরিমাণের উপর। বিশেষজ্ঞ সার্জনদের ফি এবং ব্যবহৃত প্রযুক্তির উপরও খরচের তারতম্য হয়। তবে এটি সাধারণত একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হওয়ায় অনেকেই বিনিয়োগ হিসেবে দেখে।

হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট কি সবার জন্য উপযুক্ত?

হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সবার জন্য উপযুক্ত নয়। অনেক ক্ষেত্রে চুল পড়া নিরাময়ের অন্যান্য চিকিৎসা কার্যকর হতে পারে। তাই একজন দক্ষ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে চুল প্রতিস্থাপন করলে ভালো ফলাফল হয় না, বিশেষ করে যাদের চুল পড়ার ধরন বা পরিমাণ অস্বাভাবিক।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web