আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
সাকিব আল হাসানের টেস্ট থেকে বিদায় না নেওয়ার ব্যর্থতা: বিসিবি নাকি নিরাপত্তা ইস্যু?

সাকিব আল হাসানের টেস্ট থেকে বিদায় না নেওয়ার ব্যর্থতা: বিসিবি নাকি নিরাপত্তা ইস্যু?

সাকিব আল হাসানের টেস্ট থেকে বিদায় না নেওয়ার ব্যর্থতা: বিসিবি নাকি নিরাপত্তা ইস্যু?
সাকিব আল হাসানের টেস্ট থেকে বিদায় না নেওয়ার ব্যর্থতা: বিসিবি নাকি নিরাপত্তা ইস্যু?

সাকিব আল হাসানের টেস্ট থেকে বিদায় না নেওয়ার ব্যর্থতা: বিসিবি নাকি নিরাপত্তা ইস্যু?

বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকা সাকিব আল হাসান তাঁর টেস্ট ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে টানতে চেয়েছিলেন। দেশের দর্শকদের সামনে, নিজের দীর্ঘ ১৭ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলার এই ইচ্ছা তারকা ক্রিকেটারের জন্য এক আবেগপূর্ণ মুহূর্ত হবার কথা ছিল। তবে শেষমেশ নিরাপত্তা ইস্যুর কারণে তার এই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। এ ঘটনায় বিসিবির ভূমিকা নিয়ে ভক্তদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। তবে বোর্ডের দৃষ্টিতে এটি সম্পূর্ণ নিরাপত্তা বাহিনীর সিদ্ধান্ত, যার ওপর বোর্ডের তেমন কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।

সাকিবের বিদায়ের আকাঙ্ক্ষা এবং পরিকল্পনা

সাকিব আল হাসান তাঁর দীর্ঘ টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি – তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের হয়ে অসংখ্য স্মরণীয় পারফরম্যান্স করেছেন তিনি। গত কয়েক মাস ধরে চলা গুঞ্জনের পর সাকিব সিদ্ধান্ত নেন যে টেস্ট ক্রিকেট থেকে তিনি অবসর নিতে চান। দেশের দর্শকদের সামনে শেষ টেস্ট খেলে বিদায় জানানোটা তাঁর জন্য এক আবেগপূর্ণ মুহূর্ত হবার কথা ছিল। এজন্য তিনি মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলার পরিকল্পনা করেছিলেন।

তবে শেষ মুহূর্তে নিরাপত্তা বাহিনীর সুপারিশে তাঁর পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। বিসিবি তাঁকে দেশের মাটিতে অবসর নেওয়ার সুযোগ করে দিতে চাইলেও, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরামর্শে বোর্ডকে সরে আসতে হয়। বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই সিদ্ধান্তের ওপর তাঁদের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।

বোর্ড সভাপতির মন্তব্য: কী বললেন ফারুক আহমেদ

বোর্ড সভার আগে আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, “আমাদের কিছু করার ছিল না। সাকিবের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে আমরাও সব ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলাম। তবে নিরাপত্তা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুপারিশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ

ফারুক আহমেদ আরও জানান, “আমি ব্যক্তিগতভাবে সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়েছি যাতে সাকিব দেশের মাটিতে বিদায় নিতে পারেন। তবে সাকিব এখন শুধুমাত্র একজন ক্রিকেটার নন, তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়ও রয়েছে, যা বিবেচনায় নিতে হয়েছে।”

নিরাপত্তা ইস্যু এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা

সাকিব আল হাসান শুধু একজন খেলোয়াড় নন, রাজনৈতিক পরিচয় থাকা সত্ত্বেও দেশের হয়ে খেলার জন্য তিনি বিসিবির সহায়তা নিয়েছেন। বিগত সরকারের সময় তিনি একজন সংসদ সদস্য ছিলেন, যা বর্তমানে তাঁকে অন্য এক ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাঁর ফেরার ইচ্ছার মধ্যে কিছু নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখা দিয়েছিল বলে মনে করছে বোর্ড।

আরো পড়ুনদ্বিতীয় টেস্ট নিয়ন্ত্রণ করছে সাউথ আফ্রিকা

বোর্ড সভাপতির মতে, সাকিবকে মিরপুরে বিদায় নেওয়ার সুযোগ করে দিতে বিসিবি প্রচুর চেষ্টা করেছে। ফারুক আহমেদ বলেন, “সাকিবের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তাঁর ওপর নজর রাখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁকে নিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

সাকিবের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং বিসিবির সমর্থন

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের পরও সাকিব ওয়ানডে ক্রিকেটে কিছুদিন খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি আগামী বছরের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকেও অবসরে যেতে চান। সেজন্য বিসিবিও তাঁর পরিকল্পনাকে সম্মান জানিয়েছিল। আসন্ন আফগানিস্তান সিরিজে তাঁর অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, বিসিবি এখনো আশাবাদী যে সাকিব এই সিরিজে খেলবেন।

ভক্তদের প্রতিক্রিয়া: বিসিবির ব্যর্থতা নাকি জটিল পরিস্থিতি?

সাকিবের দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট না খেলতে পারা অনেক ভক্তের জন্য এক আক্ষেপের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই বিসিবির ওপর ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন, কেননা বিসিবি সাকিবকে এই সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেনি বলে মনে করেছেন তারা। তবে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, এটি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল এবং এখানে তাদের সঠিক ভূমিকাই পালন করতে হয়েছে।

অবসরের সিদ্ধান্তে বোর্ডের দৃষ্টিকোণ

বোর্ডের দৃষ্টিতে সাকিবের মতো একজন খেলোয়াড়কে দেশের মাঠে বিদায় জানানো একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হতে পারত। বোর্ড সভাপতি বলেন, “আমরা সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে মনে করেছি যে একজন খেলোয়াড় যিনি বাংলাদেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন, তাকে দেশ থেকে বিদায় জানানো উচিত ছিল। তবে সবকিছুর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও দেখতে হয়েছে।”

সাকিব আল হাসানের অবসর ইচ্ছা পূরণ না হওয়ার পেছনে বিসিবির ভূমিকাকে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। কিন্তু বোর্ডের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণরূপে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এই পদক্ষেপ কতটা সঠিক ছিল, তা সময়ই বলে দেবে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web