আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন
রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর কিলিয়ান এমবাপ্পে ভক্তদের কাছে যে প্রত্যাশা তৈরি করেছিলেন, সেটি পূর্ণ করতে একটু সময় নিলেও, চতুর্থ ম্যাচে এসে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন। লা লিগায় তিনটি ম্যাচে গোল করতে না পারায় সমালোচকদের চোখে পড়েছিলেন এই ফরাসি তারকা।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছেন।
এমবাপ্পে এই ম্যাচে দুটি গোল করেন এবং দলকে ২-০ ব্যবধানে জয় এনে দেন। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে তিনি ফেদেরিকো ভালভের্দের পাস থেকে প্রথম গোল করেন ৬৭ মিনিটে এবং দ্বিতীয় গোলটি করেন পেনাল্টি থেকে মাত্র ৮ মিনিট পর।
কিলিয়ান এমবাপ্পে লা লিগায় টানা তিন ম্যাচ গোলহীন থাকার পর চতুর্থ ম্যাচে এসে ফর্মে ফেরার চেষ্টায় ছিলেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিল যে, এমবাপ্পের উপর কি অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে, নাকি তার খেলায় কোনো সমস্যা দেখা দিয়েছে।
কিন্তু ম্যাচের পরে এমবাপ্পে সাফ জানিয়ে দেন, তার খেলায় কোনো চাপ ছিল না। বরং তিনি বরাবরের মতোই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন এবং তার সহ খেলোয়াড়দের কাছ থেকেও একই আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলেন।
এমবাপ্পে বলেন, “আমার সারা জীবনের খেলায় গোল এসেছে এবং ভবিষ্যতেও আসবে। আমি জানি, মাঝে মাঝে গোল না পেতে পারে, কিন্তু সেটা আমার দক্ষতার উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।” তার এই কথাগুলো প্রমাণ করে যে, তিনি তার সামর্থ্য এবং ক্ষমতার উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখেন।
রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর এমবাপ্পের প্রথম ম্যাচ ছিল উয়েফা সুপার কাপে। সেই ম্যাচে তিনি আতালান্তার বিপক্ষে গোল করেছিলেন, তবে লা লিগায় মায়োর্কা, রিয়াল ভায়াদোলিদ ও লাস পালমাসের বিপক্ষে তিনটি ম্যাচে তিনি গোল পাননি। এ সময় সমালোচনার মুখে পড়লেও এমবাপ্পে চুপ ছিলেন এবং নিজের খেলায় মনোযোগ দিয়েছিলেন।
লা লিগায় বেতিসের বিপক্ষে দুই গোল করে অবশেষে তিনি নিজেকে প্রমাণ করলেন। প্রথম গোলটি ছিল ফেদেরিকো ভালভের্দের পাস থেকে, যেখানে এমবাপ্পে ডান পায়ের শটে বলকে জালে পাঠিয়ে রিয়াল ভক্তদের উল্লাসে ভাসান। দ্বিতীয় গোলটি আসে পেনাল্টি থেকে, যা দলকে আরও সুরক্ষিত করে এবং ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণ করে।
এই ম্যাচে এমবাপ্পে মোট ৯টি শট নেন, যা প্রমাণ করে যে তিনি গোলের জন্য কতটা মরিয়া ছিলেন। প্রথম গোলের জন্য ৬৭ মিনিট অপেক্ষা করতে হলেও তার এই কৌশলী প্রচেষ্টা তাকে সফল করে।
তিনি নিজে বলেন, “এটা একটা অসাধারণ মুহূর্ত ছিল। এই ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে গোলের অপেক্ষা ছিল আমার জন্য ভীষণ আনন্দের। সমর্থকেরা আমাকে শুরু থেকেই সমর্থন করেছে, এবং এটা আমাকে বড় ধরনের অনুপ্রেরণা দিয়েছে।”
লা লিগায় রিয়ালের অবস্থান এবং বার্সেলোনার সাথে প্রতিযোগিতা
লা লিগায় চতুর্থ রাউন্ড শেষে, রিয়াল মাদ্রিদ ৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে বার্সেলোনা, এবং রিয়ালের মতো ৮ পয়েন্ট নিয়েও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় তৃতীয় অবস্থানে আছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। ভিয়ারিয়াল ৮ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
এমবাপ্পের পারফরম্যান্স এই প্রতিযোগিতার মধ্যে রিয়ালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। তিনি যেভাবে নিজের খেলায় ফিরে এসেছেন, তাতে রিয়াল মাদ্রিদ লা লিগায় শিরোপা জয়ের জন্য বড় ধরনের সুবিধা পাবে।
প্রেস কনফারেন্সে চাপ সম্পর্কিত প্রশ্নে এমবাপ্পে বলেন, “আমার উপর কোনো চাপ নেই। আমি এখানে কিলিয়ান এমবাপ্পে হিসেবেই খেলতে এসেছি। ফুটবল আমার কাজ, এবং আমি আনন্দের সাথে এই খেলাটা খেলি।”
তার এই মনোভাবই প্রমাণ করে যে, তিনি শুধু একজন ভালো ফুটবলারই নন, বরং মানসিকভাবে শক্তিশালী একজন খেলোয়াড়ও।
এমবাপ্পের এই মনোভাব এবং দৃঢ়তা রিয়ালের সমর্থকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তার দক্ষতা, কৌশল, এবং অসাধারণ গোল করার ক্ষমতা নিশ্চিতভাবে রিয়াল মাদ্রিদের জন্য একটি বড় সম্পদ হয়ে উঠবে।
Leave a Reply