আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
রসায়নে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন তিন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, এনেছেন যুগান্তকারী আবিষ্কার

রসায়নে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন তিন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, এনেছেন যুগান্তকারী আবিষ্কার

রসায়নে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন তিন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, এনেছেন যুগান্তকারী আবিষ্কার
রসায়নে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন তিন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, এনেছেন যুগান্তকারী আবিষ্কার

রসায়নে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন তিন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, এনেছেন যুগান্তকারী আবিষ্কার

২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন তিন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী—ডেভিড বেকার, ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার। এই আবিষ্কারগুলি কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন ও প্রোটিন স্ট্রাকচার প্রেডিকশন সম্পর্কিত, যা বায়োটেকনোলজি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি এনেছে। সুইডেনের রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বুধবার (৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে এই পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।

ডেভিড বেকার, ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার: নতুন দিগন্তের উন্মোচন

ডেভিড বেকার, ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার

ডেভিড বেকার, ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার

ডেভিড বেকার একজন মার্কিন বিজ্ঞানী এবং ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের অধ্যাপক। তিনি কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইনের ক্ষেত্রে তার অসামান্য অবদান রেখেছেন। অন্যদিকে, ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার উভয়েই যুক্তরাজ্যের নাগরিক এবং গুগলের ডিপমাইন্ড প্রজেক্টের গবেষক। তারা প্রোটিন স্ট্রাকচার প্রেডিকশন-এর ক্ষেত্রে যুগান্তকারী গবেষণা করেছেন, যা প্রোটিনের আণবিক গঠন নির্ধারণের জটিলতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

আরও জানুন –পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জন হোপফিল্ড এবং জিওফ্রে হিন্টন

ডেভিড বেকার:
ডেভিড বেকারের কাজ কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইনকে উন্নত করেছে, যা জিনগত সমস্যার সমাধানে এবং নতুন ওষুধ তৈরিতে সহায়ক। তার গবেষণা প্রোটিনের জটিল গঠনকে ডিজিটাল মডেলে বিশ্লেষণ করে নতুন প্রোটিন তৈরি করার পথে এগিয়ে নিয়েছে। প্রোটিন ডিজাইনের মাধ্যমে ক্যান্সার, অটোইমিউন ডিজিজসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ডেমিস হাসাবিস ও জন জাম্পার:
ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার গুগলের ডিপমাইন্ডে কাজ করছেন। তাদের প্রোটিন স্ট্রাকচার প্রেডিকশন পদ্ধতি বায়োলজিক্যাল সিস্টেমের একটি মূল ধাঁধা সমাধান করেছে। এটি মানুষের দেহে প্রোটিনের জটিল গঠন পূর্বাভাস দেওয়ার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা, যা রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিপ্লবী পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। তাদের মেশিন লার্নিং ও এআই-ভিত্তিক প্রযুক্তি, প্রোটিন স্ট্রাকচারের নির্ভুল পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হওয়ায় চিকিৎসাবিজ্ঞানে বিশাল অগ্রগতি হয়েছে।

প্রোটিন স্ট্রাকচার প্রেডিকশন: বিজ্ঞানের এক যুগান্তকারী আবিষ্কার

প্রোটিন স্ট্রাকচার প্রেডিকশন হলো এমন একটি গবেষণাক্ষেত্র যেখানে বিজ্ঞানীরা প্রোটিনের আণবিক গঠনকে পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রোটিন একটি জীবের প্রতিটি কোষের মূল কার্যকরী উপাদান, যা এনজাইম, হরমোন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জৈবিক ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। কোনো প্রোটিন কীভাবে কাজ করবে তা নির্ভর করে তার ত্রি-মাত্রিক গঠনের উপর। ডেমিস হাসাবিস ও জন জাম্পার তাদের গবেষণার মাধ্যমে প্রোটিনের জটিল গঠন পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য একটি অত্যাধুনিক এআই প্রযুক্তি তৈরি করেছেন, যা বিজ্ঞানের এই জটিল সমস্যাকে অনেক সহজ করে তুলেছে।

কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন: একটি নতুন দ্বার উন্মোচন

ডেভিড বেকারের কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন কাজের মাধ্যমে নতুন ধরনের প্রোটিন তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। এটি মূলত কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রোটিনের কাঠামো ডিজাইন করে এমন নতুন প্রোটিন তৈরি করার প্রক্রিয়া। তার এই গবেষণা মূলত ক্যান্সার, এইচআইভি, অ্যালঝাইমার্স এবং অন্যান্য অনেক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতিকে উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নতুন প্রোটিন ডিজাইনের মাধ্যমে ওষুধের উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বিপ্লব ঘটাবে।

নোবেল পুরস্কারের প্রভাব

১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এটি সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে নামকরণ করা হয়, যিনি তার সম্পত্তি থেকে এই পুরস্কার দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে যান। পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য, শান্তি এবং অর্থনীতি—এই ছয়টি বিষয়ে প্রতি বছর বিশেষ অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়।

এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা বিশ্বজুড়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন। কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন এবং প্রোটিন স্ট্রাকচার প্রেডিকশন নিয়ে তাদের যুগান্তকারী কাজ গবেষণা ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছে।

রসায়নে নোবেল পুরস্কারের ভবিষ্যত প্রভাব

ডেভিড বেকার, ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পারের আবিষ্কার বায়োটেকনোলজি, জৈব রসায়ন এবং চিকিৎসা গবেষণায় ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। তাদের কাজ ক্যান্সার, ভাইরাসজনিত রোগ, জেনেটিক সমস্যার সমাধানে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। তাদের প্রযুক্তি দিয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানের এমন সমস্যার সমাধান করা যাবে, যা আগে অনেক জটিল ছিল।

ডেভিড বেকারের প্রোটিন ডিজাইনের কাজের মাধ্যমে ভবিষ্যতে জিনগত রোগের সমাধান করা সম্ভব হতে পারে, এবং ডেমিস হাসাবিস ও জন জাম্পারের মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রোটিনের গঠন বুঝতে সহায়তা করবে।

২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা রসায়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। ডেভিড বেকার, ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার তাদের যুগান্তকারী কাজের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় অভূতপূর্ব অগ্রগতি এনেছেন। এই পুরস্কার শুধুমাত্র তাদের অর্জন নয়, এটি বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞান ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web