আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন
সুস্থভাবে রক্ত দিতে যা জানা জরুরি, প্রতিবছর প্রায় ছয় থেকে সাত লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। চিকিৎসকদের মতে, প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ নারী-পুরুষ নির্দিষ্ট সময় পরপর রক্ত দিতে পারেন, এবং এতে কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। বরং, রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
রক্তদান করার উপযুক্ত সময়ঃ প্রতি চার মাস পর একজন সুস্থ মানুষ ৪৫০ মিলিলিটার (এক ইউনিট) রক্ত দিতে পারেন। এই রক্ত শরীরে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পুনরায় তৈরি হয়ে যায়। তাই সুস্থ মানুষের জন্য রক্তদানে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। তবে, রক্তদানের আগে সঠিক পরীক্ষা জরুরি।
আরো পড়ুন- রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে করনীয় ?
রক্তদানের আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা প্রয়োজনঃ
১. বয়স: রক্তদাতার বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। যাদের স্বাস্থ্যের সমস্যা রয়েছে, তাদের রক্তদানে নিরুৎসাহিত করা হয়।
২. ওজন: রক্তদানের জন্য নারীর ওজন অন্তত ৪৫ কেজি এবং পুরুষের ৪৮ কেজি থাকতে হবে। তবে সাধারণত ৫০ কেজির কম ওজন হলে রক্তদান করা নিরাপদ নয়।
৩. শারীরিক অসুস্থতা: জ্বর, সর্দি-কাশি বা অন্য কোনো সংক্রমণ থাকলে রক্তদান করা উচিত নয়। সম্পূর্ণ সুস্থ হলে তবেই রক্ত দিন।
৫. রক্তচাপ: উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপ থাকলে রক্তদান করা উচিত নয়। রক্তদান করলে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
৬. গর্ভাবস্থা: অন্তঃসত্ত্বা নারীদের রক্তদান নিষেধ। গর্ভাবস্থায় নারীরা রক্তাল্পতায় ভুগতে পারেন, তাই রক্তদানে আয়রনের ঘাটতির ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৭. সাম্প্রতিক রক্তদান: একজন ব্যক্তি সাধারণত দুই মাস বা ৫৬ দিন পরপর রক্ত দিতে পারেন। এর আগে রক্ত দিলে দাতার সুস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
৮. ট্যাটু বা পিয়ার্সিং: সম্প্রতি ট্যাটু বা শরীরের অংশে ছিদ্র (পিয়ার্সিং) করালে ছয় মাস পর রক্তদান করা যাবে।
৯. গর্ভপাত: গর্ভপাত হলে ছয় মাসের আগে রক্তদান করা উচিত নয়।
১০. টিকা: হেপাটাইটিস বি বা রেবিজের টিকা নিলে ছয় মাস রক্তদান থেকে বিরত থাকা উচিত। তবে কোভিড টিকা নিলে দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর রক্ত দেওয়া যায়।
বিশেষ পরামর্শ: রক্তদানের আগের ২৪ ঘণ্টায় মদপান থেকে বিরত থাকুন। ধূমপান করলে, রক্তদানের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে ধূমপান বন্ধ করতে হবে।
এই নিয়মগুলো মেনে রক্তদান করলে আপনি অন্যের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করতে পারেন, আর নিজের শরীরও সুস্থ থাকবে।
Leave a Reply