আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
যত ভোট তত আসনে আগ্রহ: সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার 

যত ভোট তত আসনে আগ্রহ: সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার 

যত ভোট তত আসনে আগ্রহ: সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার
যত ভোট তত আসনে আগ্রহ: সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার

যত ভোট তত আসনে আগ্রহ: সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার

বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে আলোচনা নতুন নয়। বর্তমান দ্বিদলীয় রাজনীতির মধ্যে এই পদ্ধতির প্রাসঙ্গিকতা ক্রমশ বাড়ছে। যখনই জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণমূলক সংকট দেখা দেয়, তখনই সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে ওঠে। সাম্প্রতিক সময়ে, বিশেষ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে এই আলোচনাটি নতুন মাত্রা পেয়েছে।

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা কী?

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা হল এমন একটি পদ্ধতি যেখানে একটি দল যে পরিমাণ ভোট পাবে, তার ভিত্তিতে সংসদে তাদের আসন সংখ্যা নির্ধারণ হবে। এতে করে সব দলই তাদের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।

এটি ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট পদ্ধতির বিপরীতে অবস্থান করে, যেখানে একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকার প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত ব্যক্তি বিজয়ী হন।

বাংলাদেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর প্রয়োজনীয়তা

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে, অনেক দল এবং জোট অংশগ্রহণ করে, কিন্তু সরকার গঠনকারী দল সাধারণত ৪০-৪৫ শতাংশ ভোট পায়।

এতে ৫৫-৬০ শতাংশ ভোটারের মতামত এবং তাদের চাহিদা সরকার গঠনে প্রতিফলিত হয় না। এই পরিস্থিতিতে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু হলে সব দলের মতামত সংসদে প্রতিফলিত হবে এবং একক দলের আধিপত্য কমে আসবে।

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার প্রভাব

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু হলে, আইনপ্রণেতারা তাদের মূল কাজ, অর্থাৎ আইন প্রণয়ন এবং রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণ এর দিকে মনোনিবেশ করতে পারবেন। বর্তমানে বাংলাদেশের সংসদ সদস্যরা মূলত স্থানীয় উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন,

যা তাদের মূল দায়িত্ব থেকে তাদের বিচ্যুত করছে। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালু হলে, স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হবে এবং সংসদ সদস্যরা তাদের মূল কাজ করতে পারবেন।

বিশ্বব্যাপী সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা অনেক গণতান্ত্রিক দেশে সফলভাবে চালু রয়েছে। শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের মতো দেশের উদাহরণ টেনে বলা যেতে পারে যে, এ পদ্ধতি গণতন্ত্রকে আরও মজবুত ও প্রতিনিধিত্বমূলক করে তুলেছে।

শ্রীলঙ্কানেপালে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু আছে এবং সেখানকার সংসদের উচ্চ পরিষদে এই পদ্ধতিতে সদস্য নির্বাচন করা হয়।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত

বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির পক্ষে মতামত দিয়েছে। বিশেষত বাম গণতান্ত্রিক জোট এবং গণতন্ত্র মঞ্চের মতো রাজনৈতিক জোটগুলো এই পদ্ধতিকে সমর্থন করে।

তারা মনে করেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু হলে, সব দলের প্রতিনিধিত্ব সংসদে থাকবে এবং একক দলের আধিপত্য থাকবে না। এভাবে গণতন্ত্র আরও মজবুত হবে এবং জনগণের প্রত্যাশা আরও ভালোভাবে পূরণ হবে।

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালুর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

যদিও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব অনেকবার উত্থাপিত হয়েছে, তবুও এর বাস্তবায়ন এখনও একটি চ্যালেঞ্জ। এর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত মতামত এবং সমঝোতার প্রয়োজন। তবে, এই পদ্ধতি চালু হলে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক হবে।

বাংলাদেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর বিষয়টি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক প্রস্তাব নয়, বরং এটি দেশের গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে। এই পদ্ধতি চালু হলে, দেশের সংসদে সকল দলের সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি আরও মজবুত হবে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web