আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক, নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক, নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক, নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক, নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক, নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক – চীন বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং বিশ্বস্ত সহযোগী। দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের গভীরতা বহু প্রাচীন। সেই সম্পর্ককে আরও দৃঢ় ও শক্তিশালী করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগ্রহী। বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছে।

চীনের সহযোগিতা বাংলাদেশের অগ্রগতিতে সহায়ক

আজ সোমবার ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশের প্রতি চীনের সহযোগিতার প্রশংসা করেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উভয় পক্ষই দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর গুরুত্বের বিষয়ে আলোচনা করেন। বিশেষ করে রাষ্ট্রকাঠামোর সংস্কার ও পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, চীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বিপ্লবের পর থেকে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশ, যেটি সাম্প্রতিক সময়ে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে, চীনের এই অগ্রগতির মডেল থেকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিতে চায়। তিনি আরও বলেন, সরকারের প্রধান লক্ষ্য রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কার ও নতুন অর্থনৈতিক মডেল গঠন করা, যা দেশের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহতদের চিকিৎসায় চীনের সহায়তা

নাহিদ ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার জন্য চীন সরকারের পাঠানো মেডিকেল টিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে চীনের এই সহযোগিতা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” চীনের এই সহায়তা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশেও চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ডিজিটালাইজেশনের পথে অগ্রসর হচ্ছে, এবং এই প্রক্রিয়ায় চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তা অত্যন্ত মূল্যবান।

চীনের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তিনি বিশ্বাস করেন, ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। “বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক সব সময়ের মতো অটুট থাকবে,” বলেন রাষ্ট্রদূত।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “চীন বিশ্বাস করে যে, অন্তর্বর্তী সরকার সফলতার সঙ্গে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে সক্ষম হবে।” রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে চীনের সক্রিয় সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

আরও জানুন –বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, আদানি চুক্তি ও বৈষম্যমূলক মূল্যনীতির প্রভাব

চীনে আমন্ত্রণ

সাক্ষাৎকালে চীনের রাষ্ট্রদূত উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, “চীনের সংস্কার ও অগ্রগতির অভিজ্ঞতা বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে।” চীন আশা করে, বাংলাদেশ তার সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনে একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।

বৈঠকে অন্যান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতি

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কাউন্সিলর সং ইয়াং এবং দূতাবাসের প্রথম সচিব চুই ইফেং।

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ক কেবল রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সহযোগিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সামাজিক ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রসারিত। চীনের উন্নয়ন মডেল থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ তার নিজস্ব উন্নয়ন কাঠামোকে সমৃদ্ধ করতে চায়।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের পথে চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তা বাংলাদেশকে অগ্রসর হতে সাহায্য করছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ, অবকাঠামো এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে চীনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এছাড়াও, চীন বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে সক্রিয় অংশগ্রহণ করছে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করেছে।

চীনের প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী সমাধানের গুরুত্ব

বিশ্বব্যাপী চীনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও সমাধানগুলোকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অত্যন্ত কার্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশও তার অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীনের এসব প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী সমাধান থেকে উপকৃত হতে চায়।

ডিজিটালাইজেশন ও অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতা উভয় দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনতে পারে। বাংলাদেশের সরকারের লক্ষ্য হলো, টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের মানুষকে একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ উপহার দেওয়া।

সার্বিক পরিপ্রেক্ষিত

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক কে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে যে সহযোগিতামূলক আলোচনা ও কার্যক্রম চলছে, তা নিঃসন্দেহে দুই দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

চীনও বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুই দেশের এই পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা আরও গতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই বৈঠকটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও সুসংহত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরও গভীর ও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা যায়।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web