আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের বড় হার।বাংলাদেশ ক্রিকেট দল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ভারতের কাছে ৮৬ রানের বড় পরাজয়ের মুখোমুখি হয়। এই পরাজয়ের ফলে বাংলাদেশ তিন ম্যাচ সিরিজের এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ হারালো। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় বুধবার, ৯ অক্টোবর, দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে, যেখানে টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন।
টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর শুরুতে বাংলাদেশ বল হাতে ভালোই নিয়ন্ত্রণ রাখে। পাওয়ার প্লেতে ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের শীর্ষ তিন ব্যাটসম্যানকে আউট করে ৪৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। এতে খেলা অনেকটাই বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকে যায়। তবে এরপর ভারতের নীতিশ কুমার ও রিংকু সিংয়ের ব্যাটিং ঝড়ে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
নীতিশ কুমার মাত্র ৩৪ বলে ৭৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসে ছিল ৭টি ছক্কা ও ৪টি বাউন্ডারি। অন্যদিকে, রিংকু সিংও ব্যাট হাতে সমানভাবে আক্রমণাত্মক ছিলেন, ২৯ বলে ৫৩ রান করেন। ভারতীয় দল ৯ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ২২১ রান সংগ্রহ করে। বাংলাদেশের পক্ষে রিশাদ হোসেন ৩টি উইকেট শিকার করেন।
২২২ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। মাত্র ৪৬ রানের মধ্যেই টাইগাররা তাদের শীর্ষ ৪ উইকেট হারিয়ে বসে। ওপেনার পারভেজ ইমন ১২ বলে ১৬ রান করে আউট হন, আর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৭ বলে ১১ রান করেন। এরপর লিটন দাস ১১ বলে ১৪ রান করে আউট হন এবং তাওহিদ হৃদয় মাত্র ৬ বলে ২ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ চেষ্টা করেছিলেন বিপর্যয় সামাল দিতে। তবে তাদের প্রচেষ্টা খুব বেশিদূর এগোতে পারেনি। মাহমুদউল্লাহ কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। মিরাজ করেন ১৬ বলে ১৬ রান, জাকের আলি ২ বলে ১, রিশাদ হোসেন ১০ বলে ৯, এবং তানজিম হাসান সাকিব ১০ বলে ৮ রান করেন।
বাংলাদেশের এই পরাজয়ের পেছনে ব্যাটিং বিপর্যয়ই সবচেয়ে বড় কারণ। ভারতের ২২২ রানের বিশাল স্কোর তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই দ্রুত উইকেট হারানো বাংলাদেশের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। প্রথমদিকে বোলাররা ভালো করতে পারলেও নীতিশ কুমার ও রিংকু সিংয়ের ইনিংস সামলাতে পারেনি তারা। বোলিংয়ে রিশাদ হোসেন ছাড়া অন্য কেউ সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি।
এই পরাজয়ের পর সিরিজের শেষ ম্যাচটি বাংলাদেশ দলের জন্য শুধুই সম্মান রক্ষার লড়াই। দলটি যদি তাদের ব্যাটিং ও বোলিং দুই দিকেই উন্নতি করতে না পারে, তবে শেষ ম্যাচেও পরাজয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে তরুণ খেলোয়াড়দের পারফর্মেন্স কিছুটা আশা জাগাচ্ছে। রিশাদ হোসেনের বোলিং এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রতিরোধী ভূমিকা ভবিষ্যতে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতীয় ক্রিকেট দল এই জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করেছে এবং তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ পাবে। নীতিশ কুমার ও রিংকু সিংয়ের অসাধারণ ব্যাটিং প্রদর্শনী ছিল ম্যাচের প্রধান আকর্ষণ। বিশেষ করে নীতিশের ইনিংস ছিল ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া মুহূর্ত। ভারতের তরুণ খেলোয়াড়রা এই সিরিজে দারুণভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে, যা তাদের ভবিষ্যত দল গঠনের জন্য ইতিবাচক দিক।
আরো জানুন…..মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর, ক্রিকেটের এক যুগের অবসান
বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচটি ছিল সিরিজে টিকে থাকার লড়াই, তবে বড় ব্যবধানে হেরে তারা সেই সুযোগ হারিয়েছে। ভারতের বিপক্ষে তাদের ব্যাটিং-বোলিং দুদিকেই উন্নতি করতে হবে। সামনের ম্যাচগুলোতে ভালো পারফর্মেন্স দেখানোই হবে বাংলাদেশের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
Leave a Reply