আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
সাবেক মেয়র তাপসের দুর্নীতির বাম্পার ফলন,রয়েছে ১০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র

সাবেক মেয়র তাপসের দুর্নীতির বাম্পার ফলন,রয়েছে ১০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র

সাবেক মেয়র তাপসের দুর্নীতির বাম্পার ফলন,রয়েছে ১০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র
সাবেক মেয়র তাপসের দুর্নীতির বাম্পার ফলন,রয়েছে ১০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র

সাবেক মেয়র তাপসের দুর্নীতির বাম্পার ফলন,রয়েছে ১০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে উঠেছে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ। এই অভিযোগগুলো দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তের মাধ্যমে উঠে এসেছে এবং ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, ব্যাংক লেনদেন এবং জমি দখলের মতো নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

তাপসের দুর্নীতি ও আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ

দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে যে, সাবেক মেয়র তাপসের নামে প্রায় ১০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে, যা তিনি মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করেছেন। এই সম্পদের প্রকৃত উৎস খুঁজে বের করতে দুদক তাপসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আয়কর রিটার্ন ও বিভিন্ন সম্পত্তির মালিকানার তথ্য খতিয়ে দেখছে। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তিনি মধুমিতা ব্যাংকের শেয়ার কিনে বর্তমানে সেই ব্যাংকের পরিচালকের পদে আসীন রয়েছেন।

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম

শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তিনি ডিএসসিসি পরিচালনায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তার এই সিন্ডিকেট প্রক্রিয়ায় একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, গত চার বছরে ডিএসসিসি থেকে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়। তাপসের অধীনে চাকরিচ্যুত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্য থেকে অনেকেই মনে করেন, তাদের সরানোর উদ্দেশ্যই ছিল নিজের আধিপত্য বিস্তার করা।

আরও জানুন –অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ

মৎস্য খামারের মুনাফা দেখিয়ে অর্থের উৎস পরিবর্তন

তদন্তে বলা হয়েছে, তাপস একটি অস্তিত্বহীন মৎস্য খামারের মাধ্যমে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা মুনাফা হিসেবে দাবি করেছেন, যা নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে। এই অর্থের বেশিরভাগ অংশ দিয়ে তিনি মধুমিতা ব্যাংকের শেয়ার কিনেছেন বলে জানা যায়।

জমি দখলের অভিযোগ

কামরাঙ্গীরচর এলাকায় তাপস প্রায় ৩০০টি বাড়ি আংশিক কিংবা পূর্ণ দখল করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধান অনুযায়ী, তিনি এই জমিগুলো ডিএসসিসির কিছু ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় দখল করেছেন। এই জমি দখলের মাধ্যমে তিনি নিজের প্রভাব বাড়িয়ে তুলেছেন এবং এলাকার জনগণকে বিভিন্নভাবে বাধ্য করেছেন।

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বুড়িগঙ্গা নদী রক্ষায় উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করেন। এই রিট পিটিশন তাপস এবং তার সহযোগী ম্যাজিস্ট্রেটদের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করলেও, পরবর্তীতে এই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহায়তায় তিনি বাড়ি দখলের কাজ চালিয়ে যান।

কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও অতিরিক্ত জনবল সংযোজন

ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর শেখ ফজলে নূর তাপস বিভিন্ন পদে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। জানা যায়, ভারী গাড়ির ১৪৩ জন চালক, ৬৬ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ৭৭ জন হিসাব সহকারী, ২৭ জন রেভিনিউ সুপারভাইজার, ৩১ জন পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক এবং ২০ জন স্প্রে-ম্যান সুপারভাইজারসহ বিভিন্ন পদে সর্বমোট ৮৭৯ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছে।

তাপসের প্রতিক্রিয়া

এই বিষয়ে তাপস সংবাদ মাধ্যমকে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও, তিনি বেশ কিছু দিন আগে বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তার দাবি অনুযায়ী, তিনি সব সম্পদ আইনের আওতায় রেখে অর্জন করেছেন এবং কোনো অবৈধ সম্পদের সাথে তার জড়িত নেই। তবে, দুদকের তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিগগিরই প্রকাশ পেতে পারে।

জনমনে প্রতিক্রিয়া ও প্রশাসনের উপর প্রভাব

তাপসের বিরুদ্ধে এত বিপুল পরিমাণ দুর্নীতির অভিযোগ উঠার পর জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে । তার বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ তার রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবমূর্তির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। তাপসের এই ইমেজ সংকট তার ভবিষ্যতের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। জনগণ মনে করছে, এই ধরনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হলে প্রশাসনিক সেবার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে আসবে এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

দুদকের প্রকাশ্য তদন্তে আরও নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। গত ৮ অক্টোবর সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, তার স্ত্রী আফরিন তাপস শিউলি এবং তাদের ছেলে শেখ ফজলে নাশওয়ান সহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (BFIU) দ্বারা জব্দ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাপসের অবৈধ সম্পদ উদ্ধারে দুদক আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে এবং এধরনের সম্পদের সঠিক উৎস নির্ধারণের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বৃদ্ধি করতে পারে।

এভাবে এই ঘটনা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি দমন প্রয়াসকে আরও কার্যকরী করতে পারে, পাশাপাশি সাধারণ মানুষ ও মিডিয়ার মধ্যে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web