আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন
অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে সরকারের অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ
বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া শতকোটি ডলার দেশে ফিরিয়ে আনাকে তার সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। ড. ইউনূসের মতে, অর্থনৈতিক অপরাধের এই বিশাল ধাক্কা বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে, এবং পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে তার সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ এই প্রক্রিয়াকে আরো জোরদার করার লক্ষ্যে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠকে ক্যাডম্যান ড. ইউনূসকে জানান যে,
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক মানের একটি দেশীয় ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। ক্যাডম্যান আরো উল্লেখ করেন যে,
দেশের দ্রুত সত্য, ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতার জন্য একটি কার্যকর অভ্যন্তরীণ আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা জরুরি, যা আন্তর্জাতিক মহলে সমর্থন পেতে পারে।
টবি ক্যাডম্যান বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন যে, মানবতাবিরোধী অপরাধ, অর্থনৈতিক অপরাধ এবং রাজনৈতিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের প্রত্যার্পণের জন্য একটি শক্তিশালী কাঠামো তৈরির প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ ক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোতে সহযোগিতা করার প্রস্তাব দেন এবং দেশের বাইরে পালিয়ে থাকা অপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
ড. ইউনূস বলেন যে, তার সরকার ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় যারা গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছিল ও পরিচালনা করেছিল, তাদের আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য বিচারের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, এই ধরনের অপরাধীদের বিচার করতে এবং পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে একটি শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। প্রধান উপদেষ্টা ক্যাডম্যানের প্রস্তাবগুলো গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনে তা লিখিত আকারে দাখিল করার নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতি বহু বছর ধরে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের শিকার হয়েছে। এই ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করেছে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে সরকারের প্রচেষ্টা কেবল অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফেরাবে না, বরং আন্তর্জাতিক মহলেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।
সরকার বর্তমানে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ট্রাইব্যুনাল গঠন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং
অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে এই অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে সরকার দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা শুধু দেশের অর্থনীতির জন্যই নয়, বরং দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত জরুরি। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে এই পদক্ষেপগুলো দেশের উন্নয়ন এবং সুশাসনের প্রতিফলন। আমরা আশা করি, এই প্রচেষ্টাগুলো সফল হবে এবং দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।
Leave a Reply