আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন
ন্যাশনাল ব্যাংকে ১৯৮৩ সালে প্রথম দেশীয় মালিকানায় বেসরকারী ব্যাংক হিসেবে ন্যাশনাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানাবিধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ন্যাশনাল ব্যাংক সুপ্রতিষ্ঠিত ও ঐতিহ্যবাহী একটি ব্যাংকের নাম।
ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ২২১টি শাখা, ৬৫টি উপশাখা, দেশের ভেতর ২টি ও দেশের বাইরে ৪টি সাবসিডিয়ারি, জিসিসি অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রে ২টি মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা চুক্তি সহ দেশের নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) এবং রেটিং প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের মাধ্যমে ন্যাশনাল ব্যাংক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে ব্যাংকটির মোট জনবল প্রায় ৬ হাজার, আমানতকারী ২০ লক্ষের অধিক ও ঋণগ্রহীতা প্রায় ১ লক্ষ।
ন্যাশনাল ব্যাংক আশি ও নব্বই দশকে দেশের পোশাক শিল্পের উত্থান এবং রপ্তানীতে এর অবদান সর্বজনবিদিত। এছাড়া সেই সময় থেকে ব্যাংকটি বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিকাশে এবং বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে।
কৃষি খাতের উন্নয়নেও ন্যাশনাল ব্যাংকের অনন্য ভূমিকা রয়েছে। উল্লেখ্য, এই খাতে ন্যাশনাল ব্যাংক সম্পূর্ণ নিজস্ব সক্ষমতায় বিতরণকৃত মোট ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। দেশের প্রান্তিক কৃষিনির্ভর মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যাংকটি বাংলাদেশ সরকারের সাথে “বরেন্দ্র” সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করে। যার সুফল বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের মানুষ এখনো ভোগ করছেন।
এছাড়াও শুরু থেকেই ন্যাশনাল ব্যাংক বিদেশে অবস্থানরত শ্রমজীবী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশে প্রেরণের ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশ সহ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালদ্বীপ ও গ্রিসে মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান চালু করে। বিদেশ থেকে বৈধ পথে ও নিরাপদে টাকা প্রেরণের লক্ষ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকই সর্বপ্রথম ১৯৯৪ সালে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। এতে করে বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভে একটি ইতিবাচক প্রভাব আসে।
চলতি বছর দেশের অর্থনীতিতে কার্যকর ভূমিকা পালনের লক্ষ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের বৈদেশিক রেমিট্যান্স আহরণ গত বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৫৫%। বিশেষত, চলতি বছরে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আহরণে ন্যাশনাল ব্যাংকের অবস্থান দ্বিতীয়।
ন্যাশনাল ব্যাংক প্রথমবারের মতো ১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান মাস্টার কার্ডকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবসার প্রচলন ঘটায় ।
ন্যাশনাল ব্যাংক শুধু ব্যবসায়ী শ্রেণীদের জন্যই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আপদকালীন সময়ে মানবিক প্রয়োজন সহ দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কর্পোরেট দায়বদ্ধতা (সিএসআর) থেকে বিভিন্ন জনহিতকর উদ্যোগ ও প্রয়াসে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে।
আর পড়ুন- নির্বাচন কমিশনের সামনে এক ডজন চ্যালেঞ্জ
তবে সাম্প্রতিককালে ব্যাংকিং খাতসহ সামগ্রিক অর্থনীতি চরম মন্দা ও তারল্য সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকও রয়েছে। এই ক্ষতির বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও গুজব। যার ফলে গ্রাহক এবং আমানতকারীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন এবং ব্যাংকিং খাতের প্রতি তাদের আস্থা কমে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১’-এর আওতায় ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে নতুন পর্ষদ গঠন করে। বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পর্ষদ এবং এই পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য ব্যাবসায়ী ও ন্যাশনাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক আবদুল আউয়াল মিন্টু। তার নেতৃত্বে ন্যাশনাল ব্যাংকের ঐতিহ্য ও আস্থা পুনর্ঘটনে সবাই আপ্রাণ কাজ করে যাচ্ছেন।
এই কঠিন সময়েও ন্যাশনাল ব্যাংক দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত “গার্মেন্টস শিল্প ও কারখানাগুলোর” পাশে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বিশেষত এলসি সুবিধা প্রদান সহ গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন-ভাতা সময়মতো পরিশোধ নিশ্চিত করায় ন্যাশনাল ব্যাংক সদা সচেষ্ট।
এর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রেও ন্যাশনাল ব্যাংক যথেষ্ট সচেষ্ট আছে। ফলশ্রুতিতে সাম্প্রতিক সময়েও রেমিট্যান্সে ন্যাশনাল ব্যাংকের অবস্থান দৃঢ় রয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ন্যাশনাল ব্যাংক প্রায় ৯০০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করতে সক্ষম হয়েছে এবং চলতি বছরের মধ্যে আরও ৪০০ কোটি টাকা আদায়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে আছেন :
*আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তা পরিচালক
*মোয়াজ্জেম হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তা পরিচালক
*জাকারিয়া তাহের, পরিচালক ও রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান
*মুখলেসুর রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান
* মোঃ আব্দুস সাত্তার সরকার, স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান
* ড. মেলিতা মেহজাবিন, স্বতন্ত্র পরিচালক
*মোঃ জুলকার নায়েন, স্বতন্ত্র পরিচালক
ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে আছেন :
– মো. তৌহিদুল আলম খান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও
-শেখ আকতার উদ্দিন আহমেদ, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার
– ইমরান আহমেদ, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ রিস্ক অফিসার
– মো. আব্দুল মতিন, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ ক্রেডিট অফিসার
Leave a Reply