আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন
ঢাকা টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন বাভুমা।দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল একটি উত্তেজনাপূর্ণ দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসছে। এই সিরিজের মাধ্যমে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে দুই দলের। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশ উভয়ই তাদের শক্তিশালী স্কোয়াডের মাধ্যমে উত্তেজনাপূর্ণ ক্রিকেট দেখাতে প্রস্তুত। তবে সফরের শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এসেছে একটি বড় ধাক্কা, কারণ দলের গুরুত্বপূর্ণ দুই খেলোয়াড় পেসার নান্দ্রে বার্গার ও অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ছিটকে গেছেন সিরিজের প্রথম ম্যাচ থেকে। এই সংবাদ বাংলাদেশ দলের জন্য ইতিবাচক হলেও, দক্ষিণ আফ্রিকা দলে অনভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ডের (সিএসএ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা প্রথম টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন বাম হাতের কনুইয়ে চোটের কারণে। তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চলবে বাংলাদেশেই। যদিও প্রথম টেস্টে তিনি মাঠে নামতে পারবেন না, তবে তিনি বাংলাদেশে আসবেন আগামী ১৬ অক্টোবর। চোট কাটিয়ে ওঠার পর তিনি দলের দ্বিতীয় টেস্টে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পেসার নান্দ্রে বার্গারও প্রথম টেস্টের আগে ছিটকে গেছেন। তার পরিবর্তে দলের পেস বোলিং ইউনিটে দায়িত্বভার বর্তাবে অভিজ্ঞ কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডি এবং ডেন প্যাটারসনের উপর। দুই মূল খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি প্রোটিয়া শিবিরে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি করলেও, তাদের বিকল্পরা নিজেদের প্রমাণ করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। বিশেষত, অধিনায়ক বাভুমার অনুপস্থিতিতে প্রথম টেস্টে নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান এইডেন মার্করাম। মার্করাম ইতোমধ্যেই প্রোটিয়া শিবিরে তার দায়িত্বশীল নেতৃত্ব প্রদর্শন করেছেন এবং তার ওপর অনেক প্রত্যাশা রয়েছে।
প্রথম টেস্ট ম্যাচটি শুরু হবে ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী ২১ অক্টোবর। এরপর সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচটি ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। এই দুটি ম্যাচের ফলাফল আগামী বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই দুই দলেরই লক্ষ্য থাকবে প্রতিটি ম্যাচে সর্বোচ্চ পারফর্ম করা।
বাংলাদেশ দল বর্তমানে নিজেদের শক্তিশালী টেস্ট দল নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী। ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় তাদের বাড়তি সুবিধা থাকবে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা দল অতীতে বাংলাদেশে অনেক ভালো পারফরম্যান্স করেছে, তাই দর্শকদের প্রত্যাশা থাকবে এক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সিরিজ দেখার।
দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট স্কোয়াডে এবার রয়েছে বেশ কয়েকজন তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়, যারা প্রোটিয়া শিবিরের শক্তিশালী ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি হতে পারেন। টেম্বা বাভুমার অনুপস্থিতিতে তারা আরও বেশি দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। সিএসএ প্রকাশিত স্কোয়াডে আছেন:
বাংলাদেশ দলও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের জন্য নিজেদের সেরা স্কোয়াড সাজিয়েছে। স্পিন-বান্ধব পিচে খেলা হওয়ায় বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ বিশেষ গুরুত্ব পাবে। বাংলাদেশি স্পিনাররা ঘরের মাঠে বরাবরই প্রভাবশালী। তবে প্রোটিয়া পেসাররা কিভাবে এই কন্ডিশনে নিজেদের মানিয়ে নেবে তা দেখার বিষয়। এছাড়া বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং লাইনআপে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা প্রোটিয়া বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়বেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের ফাস্ট বোলিং আক্রমণেও মুস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদ প্রোটিয়া ব্যাটিং লাইনআপে আঘাত হানতে প্রস্তুত। এই সিরিজের মাধ্যমে বাংলাদেশ দলও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের অবস্থান উন্নত করার চেষ্টা করবে।
আরো জানুন ….. ইনিংস ব্যবধানে হেরে লজ্জার বিশ্ব রেকর্ড গড়লো পাকিস্তান
আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে এই সিরিজটি দুই দলের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ম্যাচের ফলাফল পয়েন্ট টেবিলের অবস্থানে বড় প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশ দল এখনও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, এবং এই সিরিজে ভালো পারফরম্যান্স তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা দলের লক্ষ্য থাকবে তাদের শীর্ষস্থান ধরে রাখা এবং প্লে-অফের পথে এগিয়ে যাওয়া।
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে তাদের ইনজুরিগ্রস্ত খেলোয়াড়দের অভাব পূরণ করা। বিশেষত, টেম্বা বাভুমার অনুপস্থিতি দলকে মানসিকভাবে কিছুটা দুর্বল করে তুলতে পারে। তবে এইডেন মার্করামের অধীনে তারা শক্তিশালীভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। বাংলাদেশ দলও ঘরের মাঠে নিজেদের শক্তি দেখানোর জন্য প্রস্তুত, তবে তাদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে প্রোটিয়া পেসারদের সামলানো।
এই সিরিজটি দুই দলের জন্যই বড় পরীক্ষা হতে চলেছে এবং ক্রিকেটপ্রেমীরা আশা করছেন যে ম্যাচগুলো হবে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।
Leave a Reply