আজ মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশের কিছু মানুষ ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তারা সফল হতে পারবেন না। আমরা সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব।” শনিবার সকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ (এবি পার্টি)-এর প্রথম জাতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “পাঁচ মাস পরে অনেকেই জানতে চান, আমাদের অর্জন কী? আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে সাহসের সঙ্গে কথা বলছি, যা আমাদের সবচেয়ে বড় বিজয়। এবি পার্টির ভূমিকা এখানে উল্লেখযোগ্য।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই অর্জন একটি ভয়াবহ দানবীয় শাসনের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রতীক। বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা নতুন করে একটি বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ থাকার গুরুত্ব অপরিসীম।”
মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে আরও বলেন, “আমরা এমন একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই যেখানে বৈষম্য দূর হবে এবং তরুণ প্রজন্ম একসঙ্গে কাজ করে একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করবে। এখানে কোনো বিভেদ থাকবে না।” তিনি আরও বলেন, “এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। ভুল সিদ্ধান্ত বা হঠকারিতার কারণে সম্ভাবনাগুলো নষ্ট করা যাবে না।”
আরও জানুন –চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যসহ ভুক্তভোগীদের স্বজনদের শাহবাগ ‘ব্লকেড’
বিএনপি মহাসচিব দেশের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, “দেশের অর্থনীতি এখন দুর্বল অবস্থায় আছে, রাজনৈতিক পরিবেশও ভঙ্গুর। তবে আমরা একসঙ্গে লড়াই করে এই ফ্যাসিস্ট শাসনকে সরাতে পেরেছি। তাহলে কেন আমরা একটি সম্ভাবনাময় নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারবো না?”
মির্জা ফখরুল বিএনপির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, “আমরা আগেও সংস্কারের কথা বলেছি, এখনও বলছি। কিছু মানুষ মনে করেন, আমরা শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য অস্থির হয়ে পড়েছি। এটি সত্য নয়। আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই কারণ এর মাধ্যমে আমাদের শক্তি আরও বাড়বে, সরকার এবং সংসদ গঠন হবে এবং যে সংকটগুলো সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো দূর হবে।”
নির্বাচনের পরে একটি জাতীয় ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা সবাই মিলে রাজনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চাই। অন্য দলগুলোর প্রতিনিধিরাও তাদের মতামত প্রকাশ করবেন এবং আমরা সেই মতামতকে সম্মান জানাব।”
বর্তমান সরকারের প্রতি সমর্থনের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছি না, বরং অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থন করছি। তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।”
মির্জা ফখরুলের বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার গুরুত্ব এবং নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের প্রতি তার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। তিনি জোর দিয়েছেন যে, ধৈর্য, সিদ্ধান্তে স্থিরতা এবং সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই একটি গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র নির্মাণ সম্ভব। তার কথাগুলো বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি আশার আলো জ্বালিয়েছে, যা জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে।
Leave a Reply