আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
এক বছরে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা প্রদানে যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড পরিমাণ ব্যয়, যা ১৭.৯ বিলিয়ন ডলার

এক বছরে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা প্রদানে যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড পরিমাণ ব্যয়, যা ১৭.৯ বিলিয়ন ডলার

এক বছরে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা প্রদানে যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড পরিমাণ ব্যয়, যা ১৭.৯ বিলিয়ন ডলার
এক বছরে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা প্রদানে যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড পরিমাণ ব্যয়, যা ১৭.৯ বিলিয়ন ডলার

এক বছরে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা প্রদানে যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড পরিমাণ ব্যয়, যা ১৭.৯ বিলিয়ন ডলার

গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এক বছরে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা প্রদানে যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড পরিমাণ ব্যয়, যা ১৭.৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এই তথ্য ব্রাউন ইউনিভার্সিটির কস্ট অব ওয়ার প্রজেক্টের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এই বিপুল সামরিক সহায়তার ফলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান সংঘাত আরও গভীর ও বিস্তৃত হয়েছে।

গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস প্রায় এক বছর আগে ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১,২০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। সেই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে অনেককেই জিম্মি করা হয়েছিল। এর পর থেকে ইসরায়েল প্রতিশোধমূলক আক্রমণে গাজা ভূখণ্ডে আঘাত হানতে থাকে, যার ফলে প্রায় ৪২ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। শুধু গাজায়ই নয়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ইসরায়েল লেবাননের ওপরও হামলা চালায়, যেখানে হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ও বেসামরিক নাগরিকসহ কমপক্ষে ১,৪০০ জন নিহত হয়।

লেবাননে ইসরায়েলের হামলা

লেবাননে ইসরায়েলের হামলা

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলের জন্ম ১৯৪৮ সালে, তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের সবচেয়ে বড় সামরিক সহায়তাকারী দেশ হিসেবে পরিচিত। ১৯৫৯ সাল থেকে ইসরায়েল মোট ২৫১.২ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা পেয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু করে এক বছরের মধ্যে ইসরায়েলকে দেওয়া সামরিক সহায়তার পরিমাণ ১৭.৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা এখন পর্যন্ত রেকর্ড।

১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও মিশরের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর ইসরায়েল ও মিশর উভয় দেশকে শত শত কোটি ডলারের সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর থেকে এই সহায়তার ধারা অব্যাহত রয়েছে। ওবামা প্রশাসনের সময় ২০২৮ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের জন্য বার্ষিক সামরিক সহায়তা ৩.৮ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছিল।

আরও জানুন –মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের নতুন মাত্রা

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলকে দেওয়া মার্কিন সহায়তার মধ্যে রয়েছে সামরিক অর্থায়ন, অস্ত্র বিক্রি, এবং মার্কিন মজুদ থেকে কমপক্ষে ৪.৪ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম হস্তান্তর। বিশেষ করে এই বছরে ইসরায়েলকে দেওয়া অস্ত্রের মধ্যে ছিল যুদ্ধাস্ত্র, আর্টিলারি শেল, ২,০০০ পাউন্ড ওজনের বাঙ্কার-বাস্টার বোমা এবং নির্ভুল-নিয়ন্ত্রিত বোমা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলের আয়রন ডোম এবং ডেভিড’স স্লিং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা ও শক্তিশালী করার জন্য প্রায় ৪০০ কোটি ডলার ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়াও, রাইফেল, জেট ফুয়েল এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করতেও এই বিশাল পরিমাণ অর্থ ব্যবহৃত হয়েছে।

এই বিপুল পরিমাণ সহায়তা ইসরায়েলকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করলেও, এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এর কোনো ইতিবাচক ফলাফল দেখা যাচ্ছে না। বরং, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘাত আরও বাড়ছে। যুদ্ধের কারণে গাজার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে, এবং মানবিক সংকট গভীরতর হয়েছে।

কস্ট অব ওয়ার প্রজেক্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের সামরিক সহায়তা শুধু ইসরায়েলকে নয়, সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করছে। ইসরায়েলের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ফলে এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে। এছাড়াও, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

লেবাননের দক্ষিণ বৈরুতে টানা ১১টি বিমান হামলা

লেবাননের দক্ষিণ বৈরুতে টানা ১১টি বিমান হামলা

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই সামরিক সহায়তা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সমাধানে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারছে না। বরং, ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন বৃদ্ধির ফলে ফিলিস্তিনিদের অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং গাজায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করছে।

এই সমস্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে একটি বড় প্রশ্ন উঠে আসে—মার্কিন সামরিক সহায়তার এই পরিমাণ কি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, নাকি সংঘাত আরও গভীর ও দীর্ঘায়িত হবে? যুক্তরাষ্ট্রের এই বিপুল অর্থায়ন বিশ্ব রাজনীতিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, সেটি সময়ই বলে দেবে। তবে, কস্ট অব ওয়ার প্রজেক্টের প্রতিবেদন মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকট নিয়ে নতুন করে ভাবার এবং এর সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।

এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, সামরিক সহায়তা বৃদ্ধি পেলে যুদ্ধের আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার এই সংঘাত সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। শান্তির জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেরি হলে, পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web