আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের বিয়াম ফাউন্ডেশনের মিলনায়তনে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শহীদ ৩০০ পরিবারের প্রতি সংহতি জানিয়ে তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এই পরিবারগুলোর মধ্যে ১০৯টি এতিম পরিবার, ১৮৯টি সাধারণ পরিবার এবং দুটি হিন্দু পরিবার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন সমাজের সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে সাম্যের বার্তা দিয়েছে।
শহীদ পরিবারের জন্য আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি শহীদদের স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, “শহীদদের আত্মত্যাগ জাতির জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে থাকবে এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।” তিনি আরও বলেন, “এই প্রকল্পের জন্য আমরা কোনো তহবিল সংগ্রহ করিনি। ফাউন্ডেশনের সাধারণ তহবিল থেকে আমরা হতাহত ও শহীদ পরিবারকে অর্থ সহায়তা করেছি।”
শায়খ আহমাদুল্লাহর এই বক্তব্য শহীদ পরিবারদের প্রতি একটি আন্তরিক বার্তা বহন করে, যা প্রমাণ করে যে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন নিঃস্বার্থভাবে সামাজিক কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমাদ এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অন্যরকম গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ।
এই সহায়তা কার্যক্রমের মাধ্যমে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রমাণ করেছে যে, তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। ফাউন্ডেশনের তহবিল থেকে এই পরিবারগুলোর জন্য ১ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিটি শহীদ পরিবারের এক ধরনের মানসিক ও আর্থিক সমর্থন পাওয়া গেছে, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য সাহস যোগাবে। শহীদদের পরিবারগুলোর জন্য এই আর্থিক সহায়তা যেমন তাদের জন্য অবলম্বন, তেমনই এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন মানবিক কাজের মাধ্যমে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তা পাওয়া ৩০০ পরিবারের মধ্যে ১০৯টি এতিম পরিবার এবং দুটি হিন্দু পরিবার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, এই সহায়তা কার্যক্রমে কোনও ধর্ম-বর্ণের পার্থক্য করা হয়নি। এতে অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রকাশ ঘটেছে এবং বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে ফাউন্ডেশনের প্রচেষ্টা প্রতিফলিত হয়েছে। ফাউন্ডেশন সব ধর্মের মানুষের সেবা ও সহযোগিতার মাধ্যমে সাম্যের বার্তা দিয়েছে, যা সমাজের জন্য একটি অনন্য উদাহরণ।
শায়খ আহমাদুল্লাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “শহীদদের আত্মত্যাগ জাতির জন্য এক অমূল্য সম্পদ। তাদের স্মৃতি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা এবং তাদের ত্যাগ সমাজকে একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে অনুপ্রাণিত করবে।” ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে, তারা শুধু দান বা অর্থ সহায়তাতেই সীমাবদ্ধ নয় বরং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন- ইউরোপে মুসলিমদের জীবন: বৈষম্য ও চ্যালেঞ্জের এক নতুন অধ্যায়
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র, এতিম ও অসহায় মানুষদের সহায়তা প্রদান করে থাকে। এই সংগঠনটি সমাজের প্রান্তিক মানুষের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হওয়া পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে ফাউন্ডেশনটি প্রমাণ করেছে যে, তাদের লক্ষ্য শুধু আর্থিক সহায়তা নয় বরং প্রতিটি মানুষকে দারিদ্র্য ও বৈষম্য থেকে মুক্তি দিয়ে তাদের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠন করা।
শহীদ পরিবারের সদস্যগণ এই সহায়তা পেয়ে অত্যন্ত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। অনেকেই বলেছেন, এই অর্থ সহায়তা তাদের জীবনে এক নতুন আশা যোগাবে। এছাড়া তারা জানিয়েছেন, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ তাদের জন্য অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক এবং অনুপ্রেরণামূলক। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ সমাজের মানুষের মধ্যে মানবিকতা এবং সহানুভূতির বিকাশ ঘটাবে।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য কাজ করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া পরিবারের জন্য এই সহায়তা প্রমাণ করে যে, তাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র ধর্মীয় দায়িত্ব পালন নয় বরং সকল মানুষের প্রতি সাম্যের ভিত্তিতে সমাজের উন্নয়ন।
শহীদ পরিবারগুলোর জন্য আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের এই সহায়তা তাদের জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে কাজ করবে। দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য এই ধরনের দানশীল কাজ ভবিষ্যতে আরো অনুপ্রেরণামূলক উদাহরণ সৃষ্টি করবে।
Leave a Reply