আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ দল প্রথম ম্যাচে স্পিনের সামনে ধসে পড়লেও, দ্বিতীয় ম্যাচে তারা শক্তি দেখিয়ে সিরিজে সমতা এনেছে। সোমবার শারজাহতে তৃতীয় ম্যাচে সিরিজ নির্ধারণী লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে দুই দল।
প্রথম ম্যাচে স্পিনে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ
আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ২৩ বলের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারায়, ৯২ রানে হারের শিকার হয়। আফগান স্পিনে বাংলাদেশি ব্যাটাররা একের পর এক উইকেট হারিয়ে বিধ্বস্ত হয়। মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ
দলের প্রত্যয় জানিয়ে বলেন, “এখনো আমাদের সুযোগ রয়েছে। সম্ভাবনা রয়েছে।” তার মন্তব্যে দলের আত্মবিশ্বাস বজায় রাখার চেষ্টা পরিলক্ষিত হয়।
দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের রাজকীয় প্রত্যাবর্তন
দ্বিতীয় ম্যাচে ৬৮ রানে জয় তুলে নিয়ে টাইগাররা সিরিজে সমতা আনে। ব্যাট হাতে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এবং নাসুম আহমেদ অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেন। বাংলাদেশ ২৫২ রান সংগ্রহ করে, যেখানে জাকের আলী অনিক ৩৭ রান এবং সৌম্য সরকার ৩৫ রান করেন।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, “ম্যাচটি জিতে ভালোই লাগছে। তবে এখনো অনেক কিছু বাকি। আমরা শেষ ম্যাচে নজর রাখছি, আমাদের লক্ষ্য সিরিজ জয়।” তার বক্তব্যে দেখা যায় যে দল সিরিজ জয়ের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
সিরিজের নির্ধারণী ম্যাচের গুরুত্ব
বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি সোমবার বিকেল চারটায় অনুষ্ঠিত হবে। দুই দলেরই সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে এবং উভয় দল নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে প্রস্তুত। বাংলাদেশ যদি এই ম্যাচটি জয় করে, তাহলে তারা শ্রীলঙ্কার পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় সিরিজ জয় করবে। চলতি বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। আফগানদের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করতে পারলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে।
আরো পড়ুন- ২৩ রানে পড়ল শেষ ৮ উইকেট, বড় হার বাংলাদেশের
২০২৪ সালের টাইগারদের পারফরম্যান্সের বিশ্লেষণ
এই বছর নাজমুলদের অভিজ্ঞতা মিশ্র। পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের বিপক্ষে হারের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভারতের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশের শিকার হয় নাজমুল বাহিনী। তবে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-২০ তিন ফরম্যাটে টানা ৮ হারের পর শনিবারের ৬৮ রানের জয়টি গুরুত্বপূর্ণ। শারজাহতে টাইগারদের প্রথম জয় এটি এবং মরুভূমির এই মাটিতে প্রথমবারের মতো তারা জয়ী হয়েছে।
খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে উজ্জ্বলতা
দলগত পারফরম্যান্সে নাসুম আহমেদ এবং মেহেদি হাসান মিরাজের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এক বছর পর দলে ফিরেই নাসুম দুর্দান্ত ব্যাটিং ও বোলিং পারফরম্যান্স করেন, যেখানে তিনি ২৫ রান এবং ৩ উইকেট নিয়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন। এছাড়া পেসার তাসকিন আহমেদ এবং মুস্তাফিজুর রহমান নিজেদের সেরা ফর্মে ফিরে আসেন। তাসকিন এবং মুস্তাফিজ প্রথম ম্যাচে একসঙ্গে ৪টি করে উইকেট নিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েন।
কোচ ফিল সিমন্স ও সালাউদ্দিনের প্রভাব
টাইগারদের প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের বিদেশের মাটিতে এটিই প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। এর আগে তিনি ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সহকারী কোচ হিসেবে নতুন দায়িত্বে সালাউদ্দিন টাইগারদের সঙ্গে কাজ শুরু করেছেন। তিনি দলের খেলোয়াড়দের উন্নতি এবং বিদেশি কোচের সঙ্গে যোগাযোগের ঘাটতি পূরণে মনোযোগী হয়েছেন। মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে সালাউদ্দিন জানান, “আমার কাজ হবে ক্রিকেটারদের হেল্প করা, যাতে তারা আরও উন্নতি করতে পারে।”
আগামী সোমবারের ম্যাচটি টাইগারদের জন্য শুধু আরেকটি ম্যাচ নয়, বরং আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার আরেকটি সুযোগ।
Leave a Reply