আজ সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ নিউজ :
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
অফিসে চেয়ারে বসে হঠাৎ পিঠে টান ধরেছে?

অফিসে চেয়ারে বসে হঠাৎ পিঠে টান ধরেছে?

অফিসে চেয়ারে বসে হঠাৎ পিঠে টান ধরেছে?
অফিসে চেয়ারে বসে হঠাৎ পিঠে টান ধরেছে?

অফিসে চেয়ারে বসে পিঠে টান ধরলে কী করবেন?

অফিসে চেয়ারে বসে হঠাৎ পিঠে টান ধরেছে? অফিসের কাজের চাপে দীর্ঘক্ষণ চেয়ারে বসে থাকার কারণে অনেকেই হঠাৎ পিঠে টান ধরার সমস্যার সম্মুখীন হন। এটি শুধু অস্বস্তিকর নয়, বরং দিনের কাজকে ব্যাহতও করে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত আরাম পাওয়ার কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে, যা আপনি সহজেই অনুসরণ করতে পারেন। আজকের এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো কীভাবে অফিসে বসে পিঠের ব্যথা বা টান থেকে মুক্তি পাবেন এবং ভবিষ্যতে এমন সমস্যা থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন।

পিঠে টান ধরার কারণ কী?
অফিসে দীর্ঘক্ষণ চেয়ারে বসে থাকা, সঠিক ভঙ্গিতে না বসা, এবং পর্যাপ্ত শারীরিক নড়াচড়া না করার কারণে পিঠে টান ধরতে পারে। সাধারণত, যারা ডেস্ক-জব করেন, তাদের মধ্যে এই সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। অতিরিক্ত চাপের কারণে মাংসপেশি এবং হাড়ের সংযোগস্থলে টান লেগে যায়, যা পিঠে ব্যথার কারণ হতে পারে। এছাড়াও, নিম্নোক্ত কয়েকটি কারণেও পিঠে টান ধরতে পারে:

সঠিকভাবে বসার অভাব: অনেকেই কাজ করার সময় কুঁজো হয়ে বা সঠিক ভঙ্গিতে না বসে থাকেন, যার ফলে পিঠের মাংসপেশি এবং মেরুদণ্ডের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।

দীর্ঘক্ষণ এক অবস্থানে থাকা: দিনের বেশিরভাগ সময় একইভাবে বসে থাকার ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশ, বিশেষ করে পিঠ, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অপুষ্টি বা পানিশূন্যতা: শরীরে পর্যাপ্ত পানি বা পুষ্টির অভাব হলে পেশি দুর্বল হয়ে যায়, যা পিঠে টান লাগার কারণ হতে পারে।

স্ট্রেস বা মানসিক চাপ: শারীরিক চাপের পাশাপাশি মানসিক চাপও পিঠের মাংসপেশিকে প্রভাবিত করে। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ পিঠে ব্যথা তৈরি করতে পারে।

 

আরো জানুন- রক্ত সংকট ও থ্যালাসেমিয়া

 

পিঠে টান ধরলে তাৎক্ষণিক করণীয়
পিঠে টান ধরলে দ্রুত আরাম পেতে কিছু কার্যকর পদ্ধতি রয়েছে। আপনি চাইলে অফিসে বসেই এগুলো অনুসরণ করতে পারেন:

সোজা হয়ে বসুন: যখনই টান অনুভব করবেন, তখন সোজা হয়ে বসে বুক টান টান করুন। পিঠের মেরুদণ্ডকে সোজা রাখুন এবং দুই কাঁধকে স্বাভাবিক অবস্থানে রাখার চেষ্টা করুন। এই অবস্থায় কিছুক্ষণ থাকুন। এতে পেশিগুলো আরাম পাবে এবং টানের কারণে সৃষ্ট ব্যথা কিছুটা কমে যাবে।

কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন: দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকলে পেশিগুলো সঙ্কুচিত হয়ে যায়। একটু উঠে চারপাশে হাঁটাহাঁটি করলে পেশিগুলো প্রসারিত হবে এবং রক্ত চলাচল বাড়বে, যা ব্যথা কমাতে সহায়তা করবে।

হালকা স্ট্রেচিং: হালকা স্ট্রেচিং করতে পারেন, যেমন- হাতকে মাথার উপরে নিয়ে প্রসারিত করা বা একপাশ থেকে অন্যপাশে শরীরকে মোচড়ানো। তবে খুব বেশি জোর করবেন না, এতে ব্যথা বাড়তে পারে।

ঠান্ডা বা গরম সেঁক: যদি সম্ভব হয়, পিঠে হালকা গরম বা ঠান্ডা সেঁক দিন। ঠান্ডা সেঁক প্রদাহ কমায় এবং গরম সেঁক পেশিকে শিথিল করে, যা ব্যথা দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।

ডিপ ব্রিদিং: গভীর শ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে আপনি শরীরকে আরাম দিতে পারেন। গভীর শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়ার মাধ্যমে মাংসপেশি শিথিল হয় এবং পিঠের টান কিছুটা কমে।

বালিশ বা রোলড টাওয়েল ব্যবহার করুন: অফিসের চেয়ারে বসার সময় কোমরের পেছনে ছোট একটি বালিশ বা রোলড টাওয়েল রাখতে পারেন। এটি মেরুদণ্ডকে সঠিক ভঙ্গিতে রাখতে সহায়তা করে এবং পিঠের ওপর চাপ কমায়।

দীর্ঘমেয়াদে পিঠে টান ধরার সমস্যা থেকে বাঁচতে করণীয়পিঠে টান ধরার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দীর্ঘমেয়াদী কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। প্রতিদিনের জীবনে কিছু সঠিক অভ্যাস অনুসরণ করলে আপনি সহজেই এই সমস্যাটি এড়িয়ে চলতে পারবেন।

সঠিক ভঙ্গিতে বসা: অফিসে বসার সময় সঠিক ভঙ্গিতে বসার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আপনার মেরুদণ্ড সোজা এবং পায়ের তলা মাটিতে সমানভাবে রাখুন। চেয়ারটি এমন উচ্চতায় রাখুন যাতে আপনার কনুই ৯০ ডিগ্রি কোণে থাকে।

বিরতি নিন: দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পরিবর্তে প্রতি ৩০ মিনিট বা ১ ঘণ্টা পরপর ৫-১০ মিনিট বিরতি নিন। এই সময় একটু হাঁটুন বা দাঁড়িয়ে স্ট্রেচিং করুন। এতে শরীরের পেশিগুলো সচল থাকবে।

হালকা ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন হালকা কিছু ব্যায়াম করতে পারেন, যা আপনার পিঠের পেশিগুলোকে মজবুত করবে। প্ল্যাঙ্ক, কোর স্ট্রেন্থনিং, এবং ইয়োগার মতো ব্যায়ামগুলো পিঠের জন্য খুবই উপকারী।

পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ: শরীরের পেশিগুলোর সঠিক কাজের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি ও পানি প্রয়োজন। খাবারে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, এবং ভিটামিন ডি যুক্ত রাখুন। এছাড়া প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।

চেয়ার এবং ডেস্কের সঠিক উচ্চতা: অফিসে আপনার চেয়ার এবং ডেস্কের উচ্চতা সঠিক কিনা তা নিশ্চিত করুন। সঠিক উচ্চতায় না থাকলে আপনার পিঠ এবং ঘাড়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে, যা পিঠে টান ধরার কারণ হতে পারে।

স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: মানসিক চাপ পিঠের ব্যথার একটি বড় কারণ হতে পারে। প্রতিদিন কিছুটা সময় ধ্যান বা যোগব্যায়াম করতে পারেন, যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে।

ম্যাট্রেস এবং বালিশ সঠিকভাবে ব্যবহার করুন: ঘুমের সময় সঠিক ম্যাট্রেস এবং বালিশ ব্যবহার করলে পিঠের মাংসপেশিগুলো সঠিক অবস্থানে থাকে। তাই ঘুমানোর জন্য সঠিক ম্যাট্রেস এবং বালিশ নির্বাচন করুন।

পেশাদারের পরামর্শ
যদি পিঠের টান বারবার দেখা দেয় বা তীব্র ব্যথা হয়, তাহলে পেশাদারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। একজন চিকিৎসক বা ফিজিওথেরাপিস্ট আপনার পিঠের অবস্থা মূল্যায়ন করে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ বা ফিজিওথেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।

অফিসে কাজের সময় পিঠে টান ধরলে তাৎক্ষণিক কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আপনি ব্যথা কমাতে পারেন। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক ভঙ্গিতে বসা, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করা জরুরি। পিঠের মাংসপেশিগুলোকে সুস্থ রাখার জন্য সচেতনতা এবং সময়মতো পদক্ষেপ গ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পোষ্ট টি শেয়ার করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 desherbulletin.Com
Developed By One Planet Web